
ষোলো বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো কোনো আর্ন্তজাতিক গেমসে বাংলাদেশের পতাকা বইবেন শিলা। গত এসএ গেমসে দুটি সোনা জেতেন নৌ বাহিনীর এই সাঁতারু
সুসংবাদটা আগেই পেয়েছিলেন সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা। কিন্তু বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) থেকে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, এবারের এসএ গেমসে বাংলাদেশ দলের পতাকা থাকবে শিলার হাতে। আগামী ১-১০ ডিসেম্বর নেপালে বসছে এসএ গেমসের তেরোতম আসর। গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মার্চপাস্টে লাল সবুজের পতাকা হাতে নেতৃত্ব দেবেন এসএ গেমসে দুটি সোনাজয়ী শিলা।
এবার বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে ২৬৩ জন পুরুষ ও ১৯৯ জন নারী অ্যাথলেট। আর কোচ, কর্মকর্তাসহ সব মিলিয়ে ৬২১ জনের বহর যাচ্ছে নেপালে। এই দলের পতাকা বহনের জন্য বিওএর বিবেচনায় ছিল সর্বশেষ ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে সোনাজয়ী শুটার শাকিল আহমেদ, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও শিলার নাম। শেষ পর্যন্ত শিলাকেই বেছে নিয়েছে বিওএ। ফেডারেশন থেকে নানা সময়ে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন শিলা। ফেডারেশন কর্মকর্তাদের ওপর বিরক্ত হয়ে ধীরে ধীরে সাঁতার থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর সাঁতার পুলে ঝড় তুলবেন না। তবে সাঁতারু হিসেবে নয়, এবার বিওএর পর্যবেক্ষক হিসেবে নেপাল যাচ্ছেন শিলা।
বিওএ কর্মকর্তাদের এমন বিচক্ষণতায় কৃতজ্ঞ শিলা, ‘আমি আজই বিওএ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেনেছি যে নেপালে পতাকা বইতে হবে। এই অনভূতি ভালো লাগার চেয়েও বেশি কিছু। এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। বিওএ যে আমাকে বিবেচনা করেছে এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ নেপালের সুইমিং পুলে না নামলেও শিলার উপস্থিতি অ্যাথলেটদের অনুপ্রাণীত করবে। বিওএর এই চিন্তাধারা তাঁর বেশ ভালো লেগেছে, ‘বিওএর ডেলিগেট হিসেবে এটাই কোনো গেমসে আমার প্রথম সফর। তারা ভেবেছেন, আমি যদি মাঠে থাকি তাহলে আমাকে দেখে অন্য অ্যাথলেটরাও অনুপ্রেরণা পাবে। এটা একটা ইতিবাচক দিক এবং ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।’
২০০৩ সালে শিলার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু। এরপর অংশ নিয়েছেন একাধিক আন্তর্জাতিক আসরে। এর মধ্যে দুবার করে এশিয়ান ও কমনওয়েলথ গেমসে। তিন বার অংশ নিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ান গেমস ও ইন্দো-বাংলা গেমসে। বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে ছয়বার ও ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে একবার অংশ নিয়েছেন। ষোল বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে কখনোই অ্যাথলেট হিসেবে পতাকা বহন করার সুযোগ মেলেনি। কিন্তু এবার গেমসে না থেকেও রইলেন শিলা।
গত আসরে শিলা ৫০ ও ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে সোনা জিতেছিলেন। এবার তাঁর ইভেন্টে সাঁতরাবেন রোমানা আক্তার। তাঁকে নিয়েও আশাবাদী নৌ বাহিনীর সাঁতারু, ‘৫০ ও ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে রোমানা ভালোই করবে। তবে ২০০ মিটারেই ওর সম্ভাবনা বেশি।’