নতুন কমিটি পেয়েছে বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা
নতুন কমিটি পেয়েছে বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা

মহিলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক-ক্ষোভ

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর দেশের অন্য সব ক্রীড়া ফেডারেশন ও সংস্থায় পুরোনো কমিটি ভেঙে নতুন অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করা হলেও একমাত্র বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থায় সেই পরিবর্তন আসেনি এত দিন।

দীর্ঘ সাড়ে আট বছর অ্যাডহক কমিটি দিয়ে পরিচালিত হওয়ার পর অবশেষে আজ ঘোষণা করা হয়েছে মহিলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলামের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন কমিটির কথা জানানো হয়েছে।

১৯ সদস্যের এই নতুন অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ব্যারিস্টার সারওয়াত আলা হারদারকে। তাঁর পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘সিনিয়র আইনজীবী ও ক্রীড়ানুরাগী’।

সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ফিরোজা করিম নেলীকে, যিনি বিদায়ী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৭ সালের ৩ মার্চ নিয়মবহির্ভূতভাবে সাত সদস্যের পরিবর্তে গঠিত ৩১ সদস্যের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ষাটের দশকের অ্যাথলেট হামিদা বেগম। ২০২২ সালের মার্চে তিনি মারা যান। অসুস্থ থাকায় তাঁর মৃত্যুর আগে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী ফিরোজা করিম ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন।

পুরোনো কমিটির সহসভাপতি এবং গত কিছুদিনে ভারপ্রাপ্ত সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করা ইসমত আরা হায়দারকে নতুন কমিটির সহসভাপতি করা হয়েছে। সহসভাপতি পদে এসেছেন স্বাধীনতা পদক পাওয়া সাবেক অ্যাথলেট ফিরোজা খাতুন। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে সাবেক অ্যাথলেট শামীমা সাত্তার মিমুকে। সদস্য হিসেবে আনা হয়েছে সাবেক ক্রিকেটার সালমা খাতুন, সাবেক সাঁতারু সবুরা খাতুন, সাবেক অ্যাথলেট ফৌজিয়া হুদা জুঁইয়ের মতো নতুন মুখ।

সদস্য তালিকায় আরও আছেন মরিয়ম তারেক, ফরিদা আক্তার বেগম, শেহরিন আমিন, নাসরিন আক্তার বেবি, হাসনে আরা হাওয়া, রওশন আরা বেগম, মাহমুদা হক চৌধুরী, এলিনা সিদ্দিকা, আমরিন সাহজিয়া বশির এবং ক্রীড়া সাংবাদিক মৌসুমী আলম মৌ।

ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কারের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি যে তালিকা দিয়েছিল, সেই তালিকায় সভাপতি পদে ছিলেন সাবেক ব্যাডমিন্টন তারকা কামরুন নাহার ডানা।  কিন্তু তাঁকে সভাপতি করা হয়নি। ডানা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

নতুন কমিটি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিস্মিত এই কমিটি দেখে। ক্রীড়াঙ্গনে আমরা কোনো ব্যারিস্টার চাই না। ক্রীড়াঙ্গন চালাতে ক্রীড়াঙ্গনের মানুষই দরকার ছিল। তা ছাড়া এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি এক পদে থাকতে পারবে না, ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজেই মতবিনিময় সভায় বলেছিলেন। সেখানে সাড়ে আট বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা একজনকে আবার সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আর তিনি আওয়ামী ঘরানার মানুষ।’

ডানা বলেন, ‘কমিটির ৬-৭ জনকে চিনি না। নামের পাশে ক্রীড়ানুরাগী তকমা দিয়ে তাদের কমিটিতে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ধরনের কমিটি গ্রহণযোগ্য নয়।’

সার্চ কমিটির সভাপতি জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করেছি যাদের, তাদের কমিটিতেই রাখা হয়নি। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে সদস্য করা হয়েছে। আমাদের কমিটি আর ঘোষিত কমিটির মধ্যে কোনো মিল নেই। সবচেয়ে বড় কথা, সভাপতিকে আমরা চিনিই না। সরকার যা নির্দেশনা দিয়েছিল, তার সঙ্গে মিল নেই এই কমিটির।’