ক্রিকেট মাঠে দুষ্টুমি আর দমফাটা হাসির এই ছবিগুলো দেখেছেন কি

মাঠে ঝগড়াঝাঁটি, খোঁচাখুঁচি আর তিক্ততার ভিড়ে মাঝেমধ্যে ক্রিকেটারদের হেসে ওঠা—এ দৃশ্যটা কী দারুণই না লাগে! ক্রিকেট মাঠে হাসির মুহূর্ত কিন্তু কম আসে না। কখনো ব্যাটসম্যান হোঁচট খেলে গ্যালারিতে হাসির রোল ওঠে। কখনো সহজ ক্যাচ ফসকালে দেখা যায় ফিল্ডারের নার্ভাস হাসি। আবার ডিআরএসে সিদ্ধান্ত নিজের পক্ষে গেলে যে স্বস্তির হাসি, সেটারও তো এক আলাদা আনন্দ।
ডেভিড ওয়ার্নার যেমন। ভয়ংকর ব্যাটসম্যান হিসেবে নামডাক তাঁর, কিন্তু দুষ্টুমিতেও কম যান না। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ব্র্যাড হ্যাডিন চোটে ছিটকে গেলে হঠাৎই তাঁকে দাঁড়াতে হয়েছিল উইকেটকিপার হিসেবে। নতুন দায়িত্ব পেয়ে নার্ভাস হবেন কি, সমানে মজা করে গেছেন সামনে দাঁড়ানো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে। ইউনিস খানের প্রতিক্রিয়া দেখলেই বোঝা যায়, সফলই হয়েছিলেন ওয়ার্নার
সেই ওয়ার্নারই ‘স্যান্ডপেপার কেলেঙ্কারি’র নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে অ্যাশেজে ফেরার পর এক মজার কাণ্ড করলেন—ইংলিশ দর্শকের সামনে পকেট উল্টে দেখালেন, ভেতরে কিছু লুকোনো নেই! দর্শকেরা হেসে গড়াগড়ি
ক্রিকেটে রসবোধের নাম উঠলেই চলে আসে ইংলিশ কিংবদন্তি ফ্রেড ট্রুম্যানের কথা। মাঠে মজা করার সেই অভ্যাসই তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল মঞ্চে। ক্যারিয়ার শেষে নাইট ক্লাবের স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হিসেবে পেশাদারভাবেই মানুষকে হাসাতেন তিনি
হারের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেও হাসির দৃশ্য দেখা গেছে। ২০১০ অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে যেমনটা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার পিটার সিডল। ইনিংস হারের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেও হেসেছিলেন তিনি, যেন পরাজয়কেও বিদ্রূপ করছেন
টসের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই অধিনায়কের ছবিগুলো দেখলে অবাক হতে হয়। মাঠে তিক্ততা থাকলেও তখন চেহারায় খাঁটি হাসি। মাইকেল ক্লার্ক আর মাহেলা জয়াবর্ধনে যেমন—‘ওয়ার্ন-মুরালিধরন ট্রফি’র হাতের ভাস্কর্য দেখে হো হো করে হেসেছিলেন তাঁরা
সতীর্থকে নিয়ে মজা করার সুযোগ কেউ ছাড়ে না। ২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডা–বাংলাদেশ ম্যাচে বৃষ্টিতে খেলা শুরু হতে দেরি হয়। তখন ক্লে স্মিথ ঘুমিয়ে পড়েন! তাঁর এই কাণ্ড দেখে কী হাসি সতীর্থ সেলিম মুকুদ্দেমের!
২০০৫ সালে অ্যাশেজজয়ী ইংল্যান্ড দলকে প্রাসাদে ডেকেছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সেখানে কেভিন পিটারসেনের মা–বাবা নাকি রানিকে শোনাচ্ছিলেন ছেলের শৈশবের বিব্রতকর গল্প। রানি যে খুব মজা পেয়েছিলেন, ছবিতেই তা স্পষ্ট
টিম ফটোশুটও যে মজার জায়গা, সেটাই বোঝা যায় মাঝেমধ্যে। কাউন্টি দল কেন্টের কোচ জিমি অ্যাডামস বুঝতেই পারেননি, পেছন থেকে কী সব দুষ্টুমি চালাচ্ছেন মিচেল ক্লেডন
কিংবদন্তি ইংলিশ ব্যাটসম্যান ও ধারাভাষ্যকার টনি গ্রেগের মতো রঙিন চরিত্রের বিদায়ও হয়েছিল হাসির মধ্য দিয়ে। এমনকি তাঁর স্মরণসভাতেও তাঁর জীবনের গল্প শুনে সহকর্মী ধারাভাষ্যকার বিল লরির পেট ফেটে যাওয়ার মতো হাসি পেয়েছিল
ইংলিশ ব্যাটসম্যান কলিন মিলবার্নের গল্পটা ক্রিকেটের এক বড় ট্র্যাজেডি। এক দুর্ঘটনায় বাঁ চোখ হারান তিনি। তবু হাসপাতালে শুয়েও নিজের মজার গল্প আর প্রাণোচ্ছল আচরণে চারপাশকে হাসিখুশি রাখতেন। তাঁর চিকিৎসা নথিতেও নাকি লেখা ছিল—‘সংক্রামক রসবোধ আর অদম্য মানসিক শক্তি হাসপাতালের সবাইকে উজ্জীবিত করে রেখেছে’