
স্মার্টফোনের নিচে থাকা ইউএসবি টাইপ সি পোর্টকে অনেকেই শুধু চার্জ দেওয়ার মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহার করেন। কিন্তু আধুনিক স্মার্টফোনে থাকা এই ছোট পোর্ট কাজে লাগিয়ে যে চার্জের বাইরেও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে অনেক ব্যবহারকারীই অবগত নন। ইউএসবি টাইপ সি তৈরি হয়েছে একটি সর্বজনীন সংযোগব্যবস্থা হিসেবে। এর উদ্দেশ্য ছিল একাধিক আলাদা পোর্ট ও কেবলের প্রয়োজন কমিয়ে এনে একটিমাত্র সংযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ তৈরি করা। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই টাইপ সি পোর্টে যুক্ত হয়েছে একাধিক কার্যকর সুবিধা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এসব সুবিধার বড় অংশই বর্তমানে ব্যবহৃত স্মার্টফোনে আগে থেকেই রয়েছে। আলাদা করে দামি যন্ত্র কেনা বা জটিল কোনো সেটিংস পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে না। তবু জানার অভাবে এসব সুবিধা ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন ব্যবহারে আসছে না।
বর্তমানে অনেক স্মার্টফোনে রিভার্স চার্জিং–সুবিধা রয়েছে। এর মাধ্যমে ফোন শুধু নিজে চার্জ নেয় না, প্রয়োজনে অন্য যন্ত্রেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। একটি সাধারণ টাইপ সি থেকে টাইপ সি কেবল ব্যবহার করে চার্জ দেওয়া যায় ওয়্যারলেস ইয়ারবাড, ফিটনেস ব্যান্ড কিংবা জরুরি পরিস্থিতিতে অন্য একটি ফোনেও। এ পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় চার্জ দেওয়া সম্ভব না হলেও বিদ্যুৎ–সংযোগ ছাড়া অন্য যন্ত্র চার্জ করা সম্ভব।
কুইক শেয়ার বা এয়ারড্রপের মতো তারহীন পদ্ধতিতে ফাইল পাঠানো সহজ হলেও বড় আকারের ভিডিও, ছবি বা ব্যাকআপ ফাইল আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের সীমাবদ্ধতা সমস্যা তৈরি করে। ইউএসবি টাইপ সি পোর্টে সরাসরি কেবল সংযোগ ব্যবহার করলে এই সীমাবদ্ধতা এড়ানো যায়। একটি টাইপ সি থেকে টাইপ সি কেবল দিয়ে দুটি ফোন যুক্ত করলেই একটির স্টোরেজ অন্যটি থেকে ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এতে দ্রুত ও নির্ভরযোগ্যভাবে ফাইল স্থানান্তর করা যায়। নিয়মিত বড় ফাইল নিয়ে কাজ করেন, এমন ব্যবহারকারীদের কাছে এটি এখনো একটি কার্যকর পদ্ধতি।
ইউএসবি টাইপ সি পোর্টের মাধ্যমে স্মার্টফোনে কি–বোর্ড ও মাউস সংযোগ দেওয়া যায়। ইউএসবি বা ব্লুটুথ ডংগল ব্যবহার করে এসব যন্ত্র যুক্ত করা সম্ভব। ফলে দীর্ঘ সময় ই–মেইল লেখা, নথি সম্পাদনা বা টানা বার্তার উত্তর দেওয়া তুলনামূলক সহজ হয়ে ওঠে। এ ছাড়া ফোনের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হলে মাউস ব্যবহার করে প্রাথমিক কাজ চালিয়ে নেওয়ার সুযোগও থাকে। কিছু স্মার্টফোনে আবার বাহ্যিক মনিটরে যুক্ত করলে ডেস্কটপ ধাঁচের ইন্টারফেস দেখা যায়। তবে এই সুবিধা ফোনভেদে ভিন্ন হতে পারে।
অনেক স্মার্টফোনই ইউএসবি টাইপ সি পোর্টের মাধ্যমে ভিডিও আউটপুট সমর্থন করে। এর ফলে টাইপ সি পোর্টের সঙ্গে এইচডিএমআই কেবল ব্যবহার করে ফোন সরাসরি টেলিভিশন বা মনিটরের সঙ্গে যুক্ত করে ফোনের দৃশ্য বড় পর্দায় দেখা যায়।
অনেক স্মার্টফোনে হেডফোন জ্যাক না থাকলেও তারযুক্ত অডিওর ব্যবহার বন্ধ হয়নি। সেটি এখন ইউএসবি টাইপ সি পোর্টের মাধ্যমে চালু রয়েছে। বাজারে টাইপ সি সংযোগযুক্ত ইয়ারফোন পাওয়া যায়। আবার ছোট একটি টাইপ সি থেকে ৩.৫ মিলিমিটার অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করেও পুরোনো ইয়ারফোন ব্যবহার করা সম্ভব।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া