ইউটিউবে এএসএমআর ভিডিও
ইউটিউবে এএসএমআর  ভিডিও

ইউটিউব ও টিকটকে শিহরণ জাগানো ভিডিও কেন জনপ্রিয়

অনেকের ভূতের ভিডিও বা সিনেমা দেখলে গলা শুকিয়ে যায়, পিপাসা লাগে বা শরীরের রোম দাঁড়িয়ে যায়। ভয় পেলেও শিহরণ জাগানো বিভিন্ন ভিডিও ইউটিউব, টিকটকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়। এসব ভিডিওকে এএসএমআর (অটোনোমাস সেনসরি মেরিডিয়ান রেসপন্স) ভিডিও বলা হয়। এএসএমআর ভিডিওতে এমন কিছু অডিও–ভিজ্যুয়াল উদ্দীপনা তৈরি করা হয়, যা দর্শক বা শ্রোতার মস্তিষ্কে একধরনের শিহরণ বা প্রশান্তির অনুভূতি তৈরি করে।

সাধারণভাবে এএসএমআর হলো এমন এক সংবেদন, যা সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট ধরনের শব্দ বা দৃশ্য দেখে বা শুনে তৈরি হয়। ভয়ে রোম দাঁড়িয়ে যাওয়ার মতো বিষয়টিকে এ ধরনের সংবেদনের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এএসএমআর ভিডিও কয়েকটি কারণে জনপ্রিয়। আধুনিক জীবনের চাপ ও কোলাহলের মধ্যে মানুষ একধরনের মানসিক শান্তির খোঁজ করে। এএসএমআর ভিডিও মস্তিষ্কে এমন এক আরামদায়ক অনুভূতি তৈরি করে, যা মানসিক চাপ কমাতে ও মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে। অনেকেই এ ধরনের ভিডিওগুলোকে ঘুমের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করেন। ভিডিওর শান্ত, পুনরাবৃত্তিমূলক শব্দ, যেমন ফিসফিসানি, হালকা টোকা বা ব্রাশের মৃদু শব্দ মনকে শিথিল করে। এএসএমআর ভিডিওতে প্রায়ই খুব নরম স্বরে কথা বা শব্দ ব্যবহার করা হয়। এতে একধরনের ব্যক্তিগত মনোযোগের অনুভূতি তৈরি হয়।

এএসএমআর ভিডিওতে বিশেষ ধরনের উদ্দীপক শব্দ বা দৃশ্য ব্যবহার করা হয়। এ জন্য ভিডিও নির্মাতারা খুব কাছে থেকে নরম বা ফিসফিস করে কথা বলেন। অনেক ভিডিওতে কোনো শক্ত পৃষ্ঠে হালকাভাবে নখ দিয়ে টোকা দেওয়া বা মাইক্রোফোনে আলতো করে আঙুল ঘষে শব্দ তৈরি করা হয়। অনেক ভিডিওতে বিভিন্ন খাবার চিবানো, পানীয় পান করা বা মুখের অন্যান্য শব্দকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এসব আনন্দদায়ক সংবেদন তৈরি করে।

এএসএমআর ভিডিও কেন জনপ্রিয়, তা নিয়ে নানা তত্ত্ব চালু আছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এএসএমআর সংবেদন মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কিছু অংশকে সক্রিয় করে। প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স সামাজিক মিথস্ক্রিয়া ও আবেগ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত। সেই অংশকে সক্রিয় করে। এ ছাড়া ডোপামিন ও অক্সিটোসিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার এই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে। এতে আনন্দ ও আরামের অনুভূতি তৈরি হয়। কিছু গবেষক এএসএমআরকে সিনেসথেসিয়ার একটি রূপ বলে মনে করেন। কিছু শ্রবণ বা দর্শনের মাধ্যমে সংবেদন তৈরি আমাদের বিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

সূত্র: সাইকোলজি টুডে