অ্যালবাট্রস পাখি
অ্যালবাট্রস পাখি

অ্যালবাট্রস পাখির আদলে ড্রোন তৈরির চেষ্টা

অ্যালবাট্রস পৃথিবীর বৃহত্তম উড়ন্ত পাখিদের মধ্যে একটি। ১১ ফুট লম্বা ডানার অ্যালবাট্রস পাখি জীবনের বেশির ভাগ সময় বাতাসে ভেসে বেড়ায়। শুধু তা–ই নয়, ডানার শব্দ না করেই দীর্ঘ সময় উড়তে পারে অ্যালবাট্রস। আর তাই অ্যালবাট্রস পাখির ওড়ার কৌশল কাজে লাগিয়ে মনুষ্যবিহীন ড্রোন তৈরি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সির (ডারপা) অনুদানে পরিচালিত এই ড্রোন তৈরির প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানী সামেহ আইসা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, অ্যালবাট্রস পাখি আকাশে ওড়ার সময় খুব বেশি ঝাঁকুনি হয় না। এ জন্য ডায়নামিক সোয়ারিং নামে একটি কৌশল ব্যবহার করে থাকে পাখিগুলো। এই কৌশলের কারণে বাতাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খুব বেশি শক্তি খরচ না করেই ভেসে থাকা যায়। পাখিরা সহজাতভাবে তাদের গতি, ঘূর্ণন ও বায়ুর গতিকে সামঞ্জস্য করে সবচেয়ে শক্তিসাশ্রয়ী পথ খুঁজে বের করে। উঁচুতে থাকার জন্য অ্যালবাট্রস পাখি পাল তোলা নৌকার মতো বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। এভাবে তারা গতি ও ওড়ার মধ্যে সমন্বয় করে যেন শক্তি কম খরচ হয়। মাধ্যাকর্ষণ ও বাতাস ব্যবহার করে এগিয়ে যায় এই পাখি। সমুদ্রের পানি স্পর্শ করার ঠিক আগে তারা আবার ঘুরে দাঁড়ায়। এভাবেই চক্র পূরণ করে উড়তে থাকে। সবকিছুই কোনো ঝাঁকুনি ছাড়াই ঘটে। অ্যালবাট্রস পাখি যেভাবে নিঃশব্দে আকাশে ভেসে বেড়ায়, সেই একই কৌশল ব্যবহার করে ড্রোনকে দীর্ঘ পথচলার উপযোগী করার কাজ চলছে।

বিজ্ঞানী আইসা বলেন, এসব পাখি সপ্তাহে শত শত মাইল উড়তে পারে। মারা যাওয়ার সময় পর্যন্ত এসব পাখি পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যকার দূরত্বের ২০ গুণ পথ উড়তে পারে। অ্যালবাট্রসরা আক্ষরিক অর্থেই বাতাসে নাক দিয়ে ওড়ে। তাদের সংবেদনশীল নাকের ছিদ্র রয়েছে যা তাদের বাতাসের দিক ও গতি শনাক্ত করতে সাহায্য করে। পাখির নাক তাদের বাস্তব সময়ে ওড়ার সময় সামঞ্জস্য করতে সাহায্য করে। বাতাসের বাঁকবদল, গতি পরিবর্তনের মতো বিষয় বুঝতে সাহায্য করে।

অ্যালবাট্রসকে অনুকরণ করা সহজ নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী আইসা বলেন, কয়েক সেকেন্ডের ডেটা তৈরি করতে ১০০ সেকেন্ড সময় লাগতে পারে। অ্যালবাট্রস উচ্চস্তরে নির্ভুলতার সঙ্গে ওড়ার জন্য তাহলে কত ডেটা ব্যবহার করছে! এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।

সূত্র: আর্থ ডটকম