আজ রাত ৮টা ৫৬ মিনিটে মহাশূন্যের অতল গহ্বর থেকে আসা বিশাল এক গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে ছুটে যাবে বলে সতর্ক করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ২০২৫ কিউডি৮ নামের গ্রহাণুটির গতি ঘণ্টায় ৪৫ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। গতি ও আকারের কারণে গ্রহাণুটিকে সম্ভাব্য শহর ধ্বংসকারী বা সিটি কিলারের মর্যাদা দিয়েছে নাসা।
নাসার তথ্যমতে, ২০২৫ কিউডি৮ নামের গ্রহাণুটির আকার প্রায় ৩৮ মিটার বা ১২৪ ফুট। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৫৬ মিনিটে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসবে গ্রহাণুটি। এই সময় এটি আমাদের গ্রহ থেকে মাত্র ২ লাখ ১৮ হাজার ৯ কিলোমিটার দূরে থাকবে। এই দূরত্ব পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যেকার দূরত্বের অর্ধেকেরও কম। গ্রহাণুটির আকার ও গতির কারণে বিপুল ধ্বংসযজ্ঞের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে, তবে কোনো শহরের বড় অংশ ধ্বংস করে দিতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, পৃথিবীর সঙ্গে এর কোনো ধরনের সংঘর্ষের সম্ভাবনা নেই। এটি নিরাপদে আমাদের গ্রহের পাশ দিয়ে চলে যাবে।
গ্রহাণুটি প্রথম শনাক্ত করেন ভার্চ্যুয়াল টেলিস্কোপ প্রজেক্টের একদল শৌখিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তাঁরা ১৭ ইঞ্চি টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গ্রহাণুটির একটি ছবি তোলেন। তখন এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৯ লাখ কিলোমিটার দূরে ছিল। এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাঁরা নিশ্চিত হন, গ্রহাণুটি ১৭ থেকে ৩৮ মিটার চওড়া ও সরাসরি পৃথিবীর দিকেই ছুটে আসছে। গ্রহাণুটির আকার অনুমান করা হয় পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত আলোর পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে। যে কারণে সঠিক আকার সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ লন্ডনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী শ্যাম বালাজি বলেন, এই আকারের একটি গ্রহাণু যদি পৃথিবীতে আঘাত করে, তবে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্ক শহরের ওপর ১৮ মিটার আকারের একটি উল্কা বিস্ফোরিত হয়েছিল। ২০২৫ কিউডি৮ গ্রহাণুটি চেলিয়াবিনস্কের উল্কার চেয়েও বড় বলে এর ধ্বংসের ক্ষমতাও অনেক বেশি। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বালাজি বলেন, ১৯০৮ সালের তুঙ্গুস্কা ঘটনার মতো বড় গ্রহাণু হাজার হাজার বর্গ কিলোমিটার বনভূমি ধ্বংস করে দিয়েছিল। কোনো জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলে তা গুরুতর হতে পারে। যদিও এই ধরনের ঘটনা খুবই বিরল। তবে দুঃখের বিষয় হলো এটি খালি চোখে দেখা যাবে না। গ্রহাণুটি বেশ অনুজ্জ্বল বলে শক্তিশালী টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে হবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল