Thank you for trying Sticky AMP!!

ওয়ালটনের ফায়ার এক্সটিংগুইশার মডেলের টেলিভিশন দেখছেন দর্শনার্থীরা

সিইএসে বাংলাদেশের ওয়ালটন নিয়ে আগ্রহ

আজ রোববার শেষ হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি পণ্যের প্রদর্শনী কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক শো (সিইএস) ২০২৩। যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে চার দিনের এ মেলা শুরু হয়েছিল ৫ জানুয়ারি। সিইএসে বিশ্বখ্যাত প্রায় সব প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতার অংশগ্রহণ থাকে। এ আয়োজনেই ধারণা পাওয়া যায়—চলতি বছর কোন ধরনের প্রযুক্তি পণ্য চলবে।
এবারের সিইএস বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ, প্রথম বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়ালটন এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। বিশ্বের দাপুটে সব ইলেকট্রনিকস ও ঘর-গৃহস্থালির প্রযুক্তি পণ্য (হোম অ্যাপ্লায়েন্স) প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উজ্জ্বল অবস্থানে ছিল ওয়ালটন। আজ ও গতকাল শনিবার সিইএসে ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে ছিল উপচে পড়া ভিড়। দর্শক আর সম্ভাব্য ক্রেতাদের মধ্যে একটা বড় অংশ ছিল ব্রাজিল, পেরু, মেক্সিকো, জ্যামাইকা, চিলিসহ দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশের। দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক আলোচনা হয়েছে লাইবেরিয়া, ওমান ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

শ্রেণীকক্ষে ব্যবহার উপযোগী ই–বোর্ড দেখছেন এক দর্শনার্থী

ওয়ালটনের টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর আর ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি-নির্ভর স্মার্ট গৃহস্থালিসামগ্রীতে নানা দেশের দর্শনার্থীরা আগ্রহ দেখিয়েছেন। প্রদর্শনীর প্রথম তিন দিনে নানা দেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাথমিক ব্যবসায়িক আলোচনা হয়েছে ওয়ালটনের। এ আগ্রহ কাজে লাগিয়েই বিশ্ববাজারে নিজেদের পথচলা জোরালো করতে চান ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী গোলাম মুর্শেদ। তিনি জানান, আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্বল্প পরিসরে ওয়ালটন পণ্য সরবরাহ করলেও শিগগিরই এটি ব্যাপক আকারে শুরু হবে।

গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘সিইএসের মতো আয়োজনে আমরা আমাদের ব্র্যান্ডকে প্রযুক্তি বিশ্বে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছি। একই সঙ্গে পৃথিবীর কোথায় প্রযুক্তির কেমন অগ্রগতি, সে সম্পর্কে ধারণাও পাচ্ছি। আর সবার সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে আমাদের। ওয়ালটনের আইওটি-নির্ভর বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্যগুলো বিশ্বমানের। তবে আমাদের পণ্য ও প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও জ্ঞান বিনিময়ের ক্ষেত্রটিতে সবচেয়ে জোর দিচ্ছি আমরা।’

লাস ভেগাস কনভেনশন সেন্টারের সেন্ট্রাল হলে স্যামসাং, এলজি, প্যানাসনিক, সনি আর হাইসেন্সের প্যাভিলিয়নের সঙ্গে ১৭৯২৮ নম্বর প্যাভিলিয়ন ওয়ালটনের। প্রযুক্তি ও পণ্যের সম্ভার নিয়ে নান্দনিকভাবে সেজেছিল সিইএসে বাংলাদেশের একমাত্র উপস্থিতি ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নটি। ওয়ালটনের যেসব পণ্য নজর কেড়েছে সেগুলো দেখে নেওয়া যাক–

ওয়ালটন স্মার্ট রেফ্রিজারেটর

স্মার্ট রেফ্রিজারেটর

সিইএসে প্রদর্শিত ওয়ালটন স্মার্ট রেফ্রিজারেটরে রয়েছে সর্বাধুনিক ত্রিমাত্রিক কনভার্টার প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি রেফ্রিজারেটরটিকে করেছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। চারপাশ থেকে পরিবেশ ও তাপমাত্রার তথ্য নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে নিজ থেকেই বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে এই রেফ্রিজারেটর। এর একটি মডেলে আছে বেশ বড় পর্দা। রেফ্রিজারেটরের তথ্য ও নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও এখানে ভিডিও দেখা যাবে। এ ফ্রিজে আরও রয়েছে সিনথো-ফ্রেশ প্রযুক্তি, যা খাবারকে প্রাকৃতিক উপায়ে ভিটামিনসমৃদ্ধ রাখে। তিন রঙের আলো ব্যবহার করায় শাকসবজি থাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সতেজ।

স্মার্ট টেলিভিশন

সিইএসে ওয়ালটন দেখিয়েছে তিনটি নতুন টেলিভিশন। ফায়ার এক্সটিংগুইশার মডেলের টিভিতে কোনো কারণে যদি আগুন লেগে যায়, তবে এতে থাকা প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করবে। দোকান, হাসপাতালসহ বড় বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের বিজ্ঞাপন ও তথ্য দিতে সেন্ট্রাল অ্যাড ডিসপ্লের একটি টেলিভিশনও এনেছিল ওয়ালটন। ইন্টারনেটে যুক্ত (আইওটি) টিভি পর্দাগুলো একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ছাড়া হোটেলের জন্য বিশেষ প্রযুক্তির আলাদা একটি টেলিভিশন দেখিয়েছে তারা। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ পণ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানান ওয়ালটন টেলিভিশনের প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা মোস্তফা নাহিদ হোসেন।

সৌরশক্তিতে চলা ওয়ালটনের স্মার্ট এয়ার কন্ডিশনার

সৌরশক্তিচালিত স্মার্ট এসি

সৌরশক্তিতে চলা ওয়ালটনের স্মার্ট এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ঘিরেও দর্শকদের আগ্রহ দেখা গেছে সিইএসে। আইওটি প্রযুক্তি থাকায় যেকোনো স্থান থেকে এই এসি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রয়েছে অফলাইন ভয়েস কমান্ড প্রযুক্তি। ফলে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলে এসি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এ ছাড়া এতে রয়েছে ব্লুটুথ ও এয়ার প্লাজমা প্রযুক্তির থ্রি-ইন-ওয়ান কনভার্টার এয়ার কন্ডিশনার, যা প্রয়োজন অনুযায়ী রিমোটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সৌর বিদ্যুৎ-চালিত এই এসি পরিবেশবান্ধব।

ওয়ালটনের স্মার্ট ওয়াশিং মেশিন

স্মার্ট ওয়াশিং মেশিন

সিইএসে ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে দেখা গেছে স্মার্ট ওয়াশিং মেশিন। এতে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে স্মার্টফোন দিয়ে নিয়ন্ত্রণের সুবিধা রয়েছে। কাপড়ের দুর্গন্ধ দূর করতে এতে আছে বিশেষ প্রযুক্তি। ইন্টেলিজেন্ট ড্রাইং পদ্ধতিতে কাপড় এতে পুরোপুরি শুকানো যায়। এ ছাড়া এর স্টেইন ট্র্যাশ সুবিধা সব ধরনের দাগ মুছে দিতে সক্ষম।

সিইএসে ওয়ালটন দেখিয়েছে, বেশ কিছু স্মার্ট এলইডি বাতি। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী আর নান্দনিক নকশার বাতিগুলোও নিয়েও আগ্রহ ছিল দর্শকেদের। এই বাতিগুলোতে আগে থেকে সময় নির্ধারণ করে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বাতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে আরও আছে ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার একটি নতুন পণ্য। এতে একই সঙ্গে মপ ক্লিন, ভ্যাকুয়াম ক্লিন ও তারহীন স্টিমের মতো তিনটি কাজের সমন্বয় ঘটেছে।