
উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে ঐক্যবদ্ধ জনসমাজ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে গঠিত হয়েছিল ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন (ফোবানা)। শুরুর দিকে ফোবানার উদ্দেশ্য ছিল উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত স্বদেশিদের নানা সংগঠনকে একত্রীকরণ করে অনুষ্ঠান আয়োজন করা। কিন্তু সেই ফোবানা এখন বিভক্ত হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারেও হচ্ছে বিভক্ত ফোবানার সম্মেলন।
৯০ দশকের শুরুতে গঠিত ফোবানা বেশ কয়েকটি জমজমাট সম্মেলন করেছে। কিন্তু ফোবানা এখন আর আগের অবস্থায় নেই। বিভক্ত হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারেও হচ্ছে বিভক্ত ফোবানার সম্মেলন। দুটি সম্মেলন হচ্ছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। আর নিউইয়র্কে হচ্ছে ফোবানার আদলে ‘বাংলাদেশ সম্মেলন’। তিন দিনব্যাপী তিনটি সম্মেলনের দুটি সম্মেলন একই দিন ৩, ৪ ও সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। আরেকটি ফোবানা সম্মেলন হবে আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে।
এই তিনটি সম্মেলনই ব্যয়বহুল। প্রতিটি সম্মেলনের পেছনে উদ্যোক্তাদের ব্যয় হবে লাখো ডলার। ঐক্য ও সংহতির কথা সব পক্ষ থেকে বলা হলেও বিভক্তির কারণে এ সব সম্মেলন কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কমিউনিটিতে। সম্মেলনের দর্শকেরাও কোন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
স্ব স্ব অবস্থান থেকে সম্মেলন সফল করার বিষয়ে সবাই আশাবাদী। দুটি ফোবানা সম্মেলনে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হলেও নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া ম্যারিয়টের সম্মেলনে কোনো প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। এই সম্মেলনটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
লাগার্ডিয়ায় বাংলাদেশ সম্মেলন প্রসঙ্গে সম্মেলনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজাদ জানান, তাঁদের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই।
কোন্দল ও অদৃশ্য চাপের মুখে এই সম্মেলন করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো অদৃশ্য চাপে আমরা সম্মেলন করছি না। গত তিন বছর ধরে আমরা এই সম্মেলন করে আসছি। আমাদের অনুষ্ঠান নিউইয়র্কে আর অপর অনুষ্ঠান হচ্ছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। এতে কারও কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
একই দিনে ওয়াশিংটন ডিসিতে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য ফোবানা সম্মেলনের নির্বাহী সম্পাদক কাজী আযম বলেন, একই দিনে দুটি অনুষ্ঠান করা ঠিক হচ্ছে না। ওয়াশিংটন ডিসিতে ফোবানার অনুষ্ঠানটি কয়েক মাস আগেই ঠিক করা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নিউইয়র্কে একই দিনে কেন আরেকটি অনুষ্ঠান হচ্ছে তা বোধগম্য নয়। নিউইয়র্কে সম্মেলনটি না হলে অনেকেই ওয়াশিংটন ডিসিতে ফোবানায় অংশগ্রহণ করতেন বলে তিনি মনে করেন।
জ্যাকসন হাইটসের সাংস্কৃতিক কর্মী ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি সব সময় ফোবানার অনুষ্ঠানে যাই। এবার একই দিনে দুটি সম্মেলন হওয়ায় কোনটিতে যাব সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
অপর দিকে ওয়াশিংটনে নভেম্বরের ২৬,২৭ ও ২৮ তারিখ একটি ব্যতিক্রমী ফোবানা উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন সম্মেলনের চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এযাবৎকালের সবচেয়ে জমজমাট সম্মেলন করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে দেশের তারকা শিল্পীদের সঙ্গে বিশিষ্ট লোকজনের উপস্থিতি এর মধ্যেই নিশ্চিত হওয়া গেছে।