
ক্যারিবীয় দেশ হাইতিতে প্রবল সামুদ্রিক ঝড় ম্যাথিউর আঘাতে অন্তত ৮৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ম্যাথিউ ক্যারিবীয় এলাকায় গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হারিকেন।
ঝড়ের আঘাতে হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমের সুদ অঞ্চলে ধ্বংস হয়েছে ৩০ হাজার বাড়িঘর। সেখানকার রোশ-আ-বাতু শহরেই ৫০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কাছাকাছি থাকা শহর জেরেমির ৮০ শতাংশ বাড়িঘর গুঁড়িয়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহত লোকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিভাগ সূত্র বলেছে, দারিদ্র্যপীড়িত দেশটির প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন।
হারিকেন ম্যাথিউ গতকাল শুক্রবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দিকে ধেয়ে যাচ্ছিল। এটি সরাসরি মার্কিন উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। ফ্লোরিডায় গতকাল ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ঘণ্টায় প্রায় ১২০ মাইলবেগে দমকা হাওয়া বইছিল। সেখানকার ১ লাখ ৪০ হাজার বাড়িঘরে বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ হয়ে যায় বলে গভর্নর রিক স্কট জানিয়েছেন। তিনি উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। বিপর্যয়ের আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি অঙ্গরাজ্য থেকে বিপুলসংখ্যক লোককে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার ম্যাথিউকে তৃতীয় মাত্রার ঝড় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর বাতাসের বেগ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। তবে ফ্লোরিডার জন্য গতকাল পর্যন্ত স্মরণকালের সবচেয়ে বিপজ্জনক হারিকেন মনে করা হচ্ছিল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল সকালে ফ্লোরিডা উপকূলে ঝড়টির আঘাত হানার কথা।
হাইতির ৫০ হাজার মানুষকে অবিলম্বে ত্রাণ সহায়তা দিতে জরুরি আবেদন জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা রেডক্রস। তারা বলেছে, হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ম্যাথিউর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য চিকিৎসা-সহায়তা, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং জঞ্জাল সাফ করতে ৬৯ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
হাইতি এখনো ২০১০ সালের এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পের ধাক্কা পুরো সামলে উঠতে পারেনি।