Thank you for trying Sticky AMP!!

হাজার বছর আগে যেমন পাত্রে দুধ খেত শিশুরা

অস্ট্রিয়ার ভসেনডর্ফে পাওয়া এই পাত্রগুলো শিশুদের দুধ খাওয়াতে ব্যবহৃত হতো। ছবি: রয়টার্স

অদ্ভুত দর্শন সিরামিকের নানা আকারের পাত্র। বিভিন্ন প্রাণীর আকৃতিতে তৈরি। তবে একেবারে হুবহু নয়। হাজার বছর আগের এমনই কিছু পাত্র সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের মতে, এই অদ্ভুত কিন্তু সুদৃশ্য পাত্রগুলো হাজার বছর আগের মানুষ তাদের শিশুদের পশুর দুধ খাওয়াতে ব্যবহার করত।

হাজার বছর আগের পাত্র। তা কত আগের? প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, কয়েক হাজার। তা এসব পাত্র যে শিশুদের দুধ খাওয়াতেই ব্যবহৃত হতো, তার কী প্রমাণ আছে। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রত্নতত্ত্ববিদেরা একেবারে নিশ্চিত করে বলেছেন যে, অস্ট্রিয়ার ভসেনডর্ফে প্রাপ্ত এই পাত্রগুলো মূলত শিশুদের গরু, ভেড়া ও ছাগলের দুধ খাওয়াতে ব্যবহার করা হতো। পাত্রগুলোই এর প্রমাণ বহন করছে। কারণ, এসব পাত্রের গায়ে দুধের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি এ ধরনের কয়েকটি পাত্র খুঁজে পাওয়ার পরই বিষয়টি আলোচনা শুরু হয়। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই পাত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনোটির বয়স অন্তত ২,৮০০ থেকে ৩,২০০ বছর, যে সময়টাকে সাধারণভাবে ব্রোঞ্জ যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর আগে একই ধরনের আরও পাত্র পাওয়া গিয়েছিল, যার মধ্যে এমনকি সাত হাজার বছর পুরোনো পাত্রও আছে, যা মূলত নিওলিথিক সময় হিসেবে পরিচিত।

পাত্রে এভাবে দুধ খেত শিশুরা। ছবি: রয়টার্স

এ সম্পর্কিত গবেষণা নিবন্ধটি নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক ব্রিটেনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব প্রত্নতত্ত্ববিদ জুলি ডিউন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রাগৈতিহাসিক কালে শিশুদের কী ধরনের খাবার দেওয়া হতো তার একটি প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা এর মাধ্যমে হাতে পেয়েছি। প্রাগৈতিহাসিক মানুষেরা তাদের সন্তানদের কতটা যত্ন নিত তারই সাক্ষ্য বহন করছে পাত্রগুলো।’

জার্মানিতে পাওয়া এ পাত্রগুলো বেশ ছোট, যা একটি শিশুর ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এর মুখটি বেশ সরু। ফলে শিশুদের জন্য তা যথাযথ। গবেষণাধীন পাত্রগুলোর আকার পশুর মতো। নিচের দিকে মানুষের মতো পা। রয়েছে পশুর মাথার মতো সম্মুখভাগ, যেখানে রয়েছে শিংয়ের উপস্থিতি।

গবেষণা নিবন্ধের সহলেখক ও অস্ট্রিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের ইনস্টিটিউট অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড ইউরোপিয়ান আর্কিওলজির প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্যাথরিনা রিবে-স্যালিসবারি বলেন, ‘পাত্রগুলো খুবই সুন্দর। মিষ্টি দেখতে। প্রাগৈতিহাসিক মানুষের কাছেও নিশ্চয় পাত্রগুলো এ বিশেষত্ব নিয়েই হাজির হয়েছিল। তারা একই সঙ্গে শিশুদের আনন্দ দিতে চেয়েছ, যেমনটা এই সময়েও দেখা যায়। এগুলো সৃষ্টিশীলতা ও ক্রীড়াসুলভ মননের পরিচয় বহন করে, যা প্রাগৈতিহাসিক মানুষেরও যে ছিল, তা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই।’