
দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান বিক্ষোভ–সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির সরকারি হিসাবে জানানো হয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ গত ছয় দিনে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সেখানকার প্রশাসন বলছে, বিভিন্ন অপরাধীরা এ পরিস্থিতিতে সুযোগ নিচ্ছে। খবর এএফপি ও বিবিসি।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গে এক সংবাদ সম্মেলেনে দেশটির ক্ষুদ্র ব্যবসা উন্নয়নমন্ত্রী খুমবুদজো নাতশাভেনি নিহতের এই সংখ্যা জানান। আগের দিনও নিহতের সংখ্যা ছিল ৭২। খুমবুদজো নাতশাভেনি বলেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। তবে দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের কাওয়াজুলু নাতাল প্রদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগেই সেনা মোতায়েন করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। চলমান বিক্ষোভের ষষ্ঠ দিনের মাথায় সে সংখ্যা আরও বাড়িয়ে ২৫ হাজার করার কথা চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভ–সহিংসতার কারণে দেশটিতে খাদ্য ও জ্বালানির সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা চলমান পরিস্থিতিকে তাঁর দেশে ১৯৯০ সালের পর থেকে হওয়া সহিংসতাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য বলে আখ্যা দিয়েছেন। চলমান সহিংসতায় অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গুদামঘর লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে এই পরিস্থিতি জ্যাকব জুমার নিজের প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালের প্রধান শহরগুলো থেকে শুরু করে ছোট শহরগুলোর। ছয় দিনের বিক্ষোভ ও লুটপাটের ঘটনায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১ হাজার ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ক্ষমতায় থাকাকালেই জুমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্ত করছিলেন দেশটির উপপ্রধান বিচারপতি রেমন্ড জোনডো। সেই তদন্তের জন্য গত ফেব্রুয়ারিতে তলব করা হয়েছিল জুমাকে। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি।
দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জুমার এই আচরণকে আদালত অবমাননা হিসেবে রায় দেন। আদালত অবমাননার দায়ে গত ২৯ জুন জুমাকে ১৫ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। গত বুধবার আত্মসমর্পণ করেন ৭৯ বছর বয়সী জুমা। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার পর তাঁর নিজ প্রদেশ কাওয়াজুলু নাতালে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়; যা পরে পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে।