Thank you for trying Sticky AMP!!

স্বর্ণপদক পেল ইঁদুর

স্বর্ণপদক গলায় ইঁদুর মাগওয়া

বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠান। জমকালো আয়োজন। কিন্তু মর্যাদাপূর্ণ এই পদক অর্জনকারী কোনো ব্যক্তি নন। একটি ইঁদুর পেয়েছে এ পদক। স্থলমাইন শনাক্তের মতো অতিঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্যই গতকাল শুক্রবার আফ্রিকান ওই ইঁদুরটিকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মাগওয়া নামের ইঁদুরটি তার পেশাজীবনে ৩৯টি স্থলমাইন ও ২৮টি অবিস্ফোরিত গোলা শনাক্ত করেছে। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় অতিঝুঁকিপূর্ণ স্থলমাইন শনাক্ত ও তা অপসারণ করে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করেছে খুদে প্রাণীটি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাণিবিষয়ক দাতব্য সংস্থা পিপলস ডিসপেনসারি ফর সিক অ্যানিমেলস (পিডিএসএ) এই পদক দিয়েছে।

৩০টি প্রাণী এই সাহসিকতার পুরস্কার পেলেও প্রথমবারের মতো ইঁদুর মাগওয়া পেল এই সম্মাননা। পিডিএসএর ওই স্বর্ণপদকে খোদাই করে লেখা ‘প্রাণীর বীরত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য’।

সাত বছর বয়সী মাগওয়া একটি পুরুষ ইঁদুর। আফ্রিকার দেশ তানজানিয়াভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান অ্যাপোপো প্রাণীটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। অ্যাপোপো ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে নিবন্ধনকৃত। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, মাগওয়ার জন্ম ও বেড়ে ওঠা তানজানিয়ায়। ওজন ১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম। লম্বা ৭০ সেন্টিমিটার। এই প্রজাতির ইঁদুর অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক বড় হলেও মাগওয়া এখনো অনেক ছোট ও হালকা–পাতলা গড়নের। ফলে যখন সে মাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে যায়, তখন সেটি বিস্ফোরিত হওয়ার মতো ভর সৃষ্টি করতে পারে না।

অ্যাপোপো জানায়, তারা ইঁদুরগুলোকে প্রশিক্ষণ দেয় মূলত বিস্ফোরক যন্ত্রের মধ্যে থাকা রাসায়নিক উপাদান শনাক্তের জন্য। এই প্রাণীগুলো যখন কোনো বিস্ফোরক উপাদান খুঁজে পায়, তখন সঙ্গে থাকা মানুষ সহকর্মীকে সতর্কবাতা দেয়। মাগওয়া টেনিস কোর্টের মতো আয়তনের একটি মাঠ তল্লাশির জন্য মাত্র ২০ মিনিট সময় নেয়। মেটাল যন্ত্রের সাহায্যে একই আয়তনের মাঠে তল্লাশির জন্য মানুষের সময় লাগে ১ থেকে ৪ দিন।

পিডিএসএর মহাপরিচালক জ্যান ম্যাকলাফলিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘অ্যাপোপোর সঙ্গে মাগওয়ার কাজ সত্যিকার অর্থেই অনন্য ও অসাধারণ।’

অ্যাপোপোর প্রধান নির্বাহী ক্রিসটোফ কক্স এপিকে বলেন, ‘মাগওয়ার এই স্বর্ণপদকপ্রাপ্তি আমাদের জন্য অনেক সম্মানের।’

কম্বোডিয়ায় ৬০ লাখের বেশি স্থলমাইন রয়েছে। স্থলমাইন অপসারণে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) হালো ট্রাস্টের তথ্যমতে, ১৯৭৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্থলমাইন বিস্ফোরিত হয়ে দেশটিতে ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সত্তরের দশক থেকে আশির দশক পর্যন্ত চলা দেশটির গৃহযুদ্ধের সময় এসব মাইন পুঁতে রাখা হয়।