Thank you for trying Sticky AMP!!

পশ্চিমবঙ্গে দুই বাংলাদেশিকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩

দুই বাংলাদেশি অপহরণের ঘটনায় এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার পাটুলি এলাকা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবড়া এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সেলিম, সালাউদ্দিন ও নাসিমা বিবি। সেলিমের বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ে।। নাসিমা সালাউদ্দিনের স্ত্রী। তাঁদের বাড়ি হাবড়ায়। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ব্যবসা-সংক্রান্ত কাজে কয়েক দিন আগে কলকাতায় গিয়েছিলেন বশির মিয়া নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। বশির মিয়ার কাপড়ের ব্যবসা। প্রায়ই তাঁর কলকাতায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কলকাতায় সেলিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তাঁর। ব্যবসা-সংক্রান্ত কেনাকাটা দুজন মিলেই করেন।

এবারও কলকাতায় গিয়ে সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বশির মিয়া। বশির মিয়ার সঙ্গে ছিলেন তাঁর আরেক বাংলাদেশি বন্ধু ইলিয়াস। উদ্দেশ্য ছিল ব্যবসা-সংক্রান্ত কাজ এবং পরিবারের জন্য কিছু গয়না কেনা। উঠেছিলেন শিয়ালদহের একটি আবাসিক হোটেলে।

৭ নভেম্বর বশির, ইলিয়াস ও সেলিম তাঁদের কলকাতার বন্ধুদের নিয়ে শিয়ালদহের একটি শপিংমলে দুপুরের খাবার খান। এরপর সেলিম বলেন, ব্যবসার একটি কাজে আমাদের এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে হাবড়া যেতে হবে। এই বলে সেলিম ও তাঁর সহযোগীরা বশির ও ইলিয়াসকে নিয়ে শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে উঠে হাবড়ায় যান। হাবড়া স্টেশনে নামার পর সেলিমের বন্ধুরা উগ্রমূর্তি ধারণ করেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা সিবিআইয়ের লোক। তোকে এখনই আমাদের সঙ্গে যেতে হবে, নইলে তোদের মেরে ফেলব।’ তাঁদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। এরপর একটি মোটরসাইকেলে করে হাবড়ার এক অজ্ঞাত স্থানে বশির ও ইলিয়াসকে নিয়ে যান তাঁরা। সেটি ছিল সালাউদ্দিন ও নাসিমার বাড়ি। সেখানে বশির ও ইলিয়াসকে আটকে রেখে ৫০ লাখ রুপি মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তা না হলে তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।

সেলিম শপিংমলে খাওয়ার সময়ই জেনে নেন বশিরের কাছে ৭ হাজার মার্কিন ডলার ও নগদ ৪৫ হাজার রুপি রয়েছে। তাঁদের আটকে সেলিম ও তাঁর সঙ্গীরা ওই অর্থ লুটে নেন। এর মধ্যে বশিরকে বাধ্য করেন আরও অর্থ জোগাড় করতে। বশির তাঁর পরিবারকে ফোন করে ৬ লাখ রুপির ব্যবস্থা করেন। পরে বশির ও ইলিয়াসকে সীমান্ত পার করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য সেলিম এক দালালকে নিয়ে আসেন। বেনাপোল সীমান্ত হাবড়ার কাছেই। ওই দালালকে দিয়ে বশির ও ইলিয়াসকে জোর করে পাঠানো হয় বেনাপোল সীমান্তের দিকে। সীমান্তের কাছে এসে বশির ওই দালালকে বলেন, তাঁদের ছেড়ে না দিলে সীমান্তের বিএসএফকে সব কথা বলে দেবেন। পরে দালালেরা বশির ও ইলিয়াসকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

বশির কলকাতার শিয়ালদহ এলাকার এন্টালি থানায় এই ঘটনা জানিয়ে মামলা করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, সেলিম এক কুখ্যাত প্রতারক চক্রের সদস্য। বাংলাদেশিদের প্রতারণা করে অর্থ আদায় এবং মানব পাচারই তাঁর লক্ষ্য। কলকাতাতেই ওই চক্রের ডেরা।

পরে কলকাতার পুলিশ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হাবড়া থেকে গ্রেপ্তার করে সালাউদ্দিন ও নাসিমাকে। কিন্তু অন্য দলটি ক্যানিং গেলে সেলিম পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান। এরপর গতকাল সেলিমকে দক্ষিণ কলকাতার পাটুলি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।