উত্তর কোরিয়ার কোনো এক অজানা স্থান থেকে গতকাল রোববার দূরপাল্লার কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উনের উপস্থিতিতে হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার একটি মুহূর্ত
উত্তর কোরিয়ার কোনো এক অজানা স্থান থেকে গতকাল রোববার দূরপাল্লার কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উনের উপস্থিতিতে হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার একটি মুহূর্ত

উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, নিজেই তদারক করলেন কিম

উত্তর কোরিয়া দূরপাল্লার কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উন সশরীর উপস্থিত থেকে এই পরীক্ষা তদারক করেছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশের পারমাণবিক যুদ্ধ সক্ষমতার ‘সীমাহীন ও নিরবচ্ছিন্ন’ উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছেন।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানায়, গতকাল এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পিয়ংইয়ংয়ের পশ্চিমে সমুদ্রের ওপর নির্ধারিত কক্ষপথ দিয়ে উড়ে গিয়ে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এ ঘটনায় কিম জং–উন সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

২০২৬ সালের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির নবম কংগ্রেস বা মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সম্মেলনে পরবর্তী পাঁচ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হবে। এর আগে নিজের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিমত্তা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে কিম সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক সামরিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা শেষে কিম বলেন, ‘দেশ যখন নানা দিক থেকে নিরাপত্তা হুমকির মুখে, তখন আমাদের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়মিত যাচাই করা একটি দায়িত্বশীল কাজ।’ তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পিয়ংইয়ং তাদের পারমাণবিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গতকাল সকালে পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এলাকা থেকে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। সিউল সতর্ক করে বলেছে, বছরের শেষ দিকে পিয়ংইয়ং আরও বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৮ হাজার ৭০০ টন ওজনের নির্মাণাধীন একটি বিশাল ‘পারমাণবিক সাবমেরিন’ পরিদর্শন করেন কিম জং–উন। সে সময় সঙ্গে ছিল তাঁর মেয়ে কিম জু-আয়ে, যাঁকে কিমের উত্তরসূরি হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

ওই সময় কিম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরির পরিকল্পনা উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি এবং এর কড়া জবাব দেওয়া হবে।

২০১৯ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং–উনের শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই উত্তর কোরিয়া নিজেদের ‘অপ্রতিরোধ্য’ পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়তে কয়েক হাজার সেনা পাঠিয়ে এবং মস্কোর রাজনৈতিক সমর্থন পেয়ে কিম জং–উন আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসী অবস্থানে রয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।