দক্ষিণ কোরিয়ায় কলেজে ভর্তি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়
দক্ষিণ কোরিয়ায় কলেজে ভর্তি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়

কলেজে ভর্তি পরীক্ষার জন্য উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ধরনের উড়োজাহাজ চলাচল ৩৫ মিনিটের জন্য বন্ধ। ব্যাংক ও সরকারি কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, এক ঘণ্টা দেরি করে আসতে, যাতে রাস্তায় কোনো যানজট না লাগে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। কারণ, এদিন ছিল দেশটির তীব্র প্রতিযোগিতামূলক কলেজ ভর্তি পরীক্ষা, যা ‘সুনুং’ নামে পরিচিত।

সুনুং শুরু হয়েছিল সকাল থেকে। তবে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল দুপুর ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত। কারণ, এই সময়ে ইংরেজি লিসনিং পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সময়ে জরুরি ফ্লাইট ছাড়া আর কোনো বিমান ওঠানামা করতে পারেনি।

ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সিউলের ইয়ংসান হাইস্কুলে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শিক্ষার্থীদের ভিড় শুরু হয়। ১৮ বছর বয়সী পরীক্ষার্থী কিম মিন-জে বলেন, ‘আমি কিছুটা নার্ভাস। কিন্তু প্রস্তুতি ভালো। সবচেয়ে ভালো করতে চাই।’ হাসতে হাসতে কিম যোগ করেন, ‘আমার চেয়ে বাবা-মা বেশি চিন্তিত।’

দক্ষিণ কোরিয়ায় কলেজ ভর্তি পরীক্ষা বা সুনুংয়ের ওপর নির্ভর করে শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, ভবিষ্যৎ পেশা, সামাজিক মর্যাদা—সবকিছুর পথ খুলে যায়। তাই কর্তৃপক্ষও এই পরীক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। প্রতিবছরের মতো এবারও পুলিশের দ্রুত সেবা দেখা গেছে। কোনো শিক্ষার্থী দেরি করলে তাঁকে মোটরসাইকেলে করে দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে। চলতি বছর এই পরীক্ষায় ৫ লাখ ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন।

সুনুং পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কোরিয়ায় কিছু কুসংস্কারও চালু আছে। যেমন এদিন কোনো পরীক্ষার্থী ‘সি-উইড’ স্যুপ খান না। কারণ, এতে নাকি পরীক্ষার ফল খারাপ হতে পারে। আর পরীক্ষার দিন সকালে সন্তানদের হলে পাঠিয়ে অনেকের মা-বাবা গির্জা বা বৌদ্ধমন্দিরে প্রার্থনা করতে চলে যান।

এক শিক্ষার্থীর ৫০ বছর বয়সী মা হান ইউ-না বলেন, ‘পরীক্ষার সময়সূচি মেনে আমিও পুরোটা সময় প্রার্থনা করব। ছেলে যখন বিরতি নেবে, আমিও নেব।’ তিনি ছেলেকে বলেন, ‘প্রিয় বৎস, শেষ পর্যন্ত মনোযোগ ধরে রেখো। ভালোবাসা রইল।’