‘বিশ্বের কাছে শেষবার সাহায্যের আবেদন’ ইউক্রেনীয় কমান্ডারের

ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোলে রুশ সেনাদের প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা
 ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনীর ব্যাপক লড়াই চলছে। সেখানে বহু সেনা পাঠিয়েছে রাশিয়া। তাদের প্রতিরোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। এমন পরিস্থিতিতে ‘বিশ্বের কাছে শেষবার সাহায্যের আবেদন’ জানিয়েছেন ইউক্রেনের নৌবাহিনীর কমান্ডার মেজর শেরহিই ভোলায়না। শেরহিই ভোলায়না বলেছেন, রুশ বাহিনীর তুলনায় সেখানে তাঁদের সেনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তাঁদের রসদও ফুরিয়ে যাচ্ছে। খবর বিবিসির।

মারিউপোলে ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে রাশিয়া। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও ইউক্রেনের সেনাদের পক্ষ থেকে তা মেনে চলার কোনো ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। শহরটিতে এখন ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শুধু আজোভস্টাল নামের একটি স্টিল তৈরির কারখানা। সেখানে এক হাজার বেসামরিক মানুষ আছেন বলে জানা যাচ্ছে। কিয়েভ বলছে, শহর থেকে কিছু বেসামরিক লোকজনকে উদ্ধারে একটি অস্থায়ী চুক্তি হয়েছে।

মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বোইশেঙ্কো দেশটির একটি জাতীয় টেলিভিশনকে বলেন, শহরে আটকা পড়া প্রায় ছয় হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য গতকাল বুধবার ৯০টি বাস পাঠানো হবে বলে আশা করেছিলেন তিনি। মেয়র ভাদিম বোইশেঙ্কো আরও বলেন, মারিউপোলে প্রায় এক লাখ সাধারণ মানুষ আটকা পড়েছে।

তবে আঞ্চলিক গভর্নর পাভলো কিরিলেঙ্কো বলছেন, যত বাস পাঠানো হয়েছিল, তার সব কয়টি পরিকল্পনা অনুযায়ী আটকা পড়া মানুষ পর্যন্ত যেতে পারেনি। ফলে যত জনকে উদ্ধার করার কথা ছিল, সেটা সম্ভব হয়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি আরও বলেন, যেখান থেকে নিয়ে আসার কথা ছিল, এসব মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনই এদিন বাসে উঠেছিলেন। পরে তাঁদের বাসে করে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়।

মারিউপোলে এখন কতজন ইউক্রেনীয় সেনা রয়েছেন সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো হিসাবও পাওয়া যায়নি। তবে বিবিসিকে পাঠানো একটি ভিডিও বার্তায় মেজর ভোলায়না বলেছেন, মারিউপোলে তাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ এলাকা ওই স্টিল কারখানায় প্রায় ৫০০ আহত ইউক্রেনীয় সেনাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

মেজর ভোলায়না ইউক্রেনের ৩৬ ম্যারিন ব্যাটালিয়নের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, সেনারা অস্ত্র ও গোলাবারুদের সংকটে পড়েছেন। তাই ভিডিও বার্তায় তিনি বিশ্বের কাছে শেষবারের মতো সাহায্যের আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘এটাই হয়তো আমাদের শেষ আবেদন।’ তিনি আরও বলেছেন, মারিউপোলে এখন ইউক্রেনীয় সেনাদের তুলনায় রুশ সেনাদের সংখ্যা কয়েক ডজন গুণ বেশি। এরপরও ইউক্রেনের সেনাদের মনোবল এখনো অনেক বেশি বলে জানান মেজর ভোলায়না।