Thank you for trying Sticky AMP!!

রাশিয়ার হামলার আগেই কৃষ্ণসাগর ছেড়ে চলে যায় ন্যাটোর যুদ্ধজাহাজ

কৃষ্ণসাগরে প্রবেশের আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে রাশিয়ার সাবমেরিন

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কৃষ্ণসাগর। ইউক্রেনে যখন হামলা চলছে, তখন দেশ দুটির সীমান্তঘেঁষা এ বিস্তীর্ণ জলরাশিতে টহল দিচ্ছে রুশ যুদ্ধজাহাজ। তবে সেখানে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর উপস্থিতি এখন নেই। খবর রয়টার্সের

গত জানুয়ারির শুরুর দিকে রাশিয়া–ইউক্রেন ইস্যুতে উত্তেজনা যখন চরমে, সে সময় কৃষ্ণসাগর ছেড়ে যায় ন্যাটোর সদস্যদেশ ফ্রান্সের একটি যুদ্ধজাহাজ। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোটটির আর কোনো জাহাজ নজরে পড়েনি।

কৃষ্ণসাগরে বিদেশি জাহাজের চলাচলের খবরাখবর প্রকাশ করে তুরস্কের ওয়েবসাইট টার্কিশনেভি ডটনেট। সেখানেই এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। টার্কিশনেভি ও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কৃষ্ণসাগরে এখন রাশিয়ার নৌবাহিনীর ১৬টি সামরিক নৌযান টহল দিচ্ছে।

Also Read: রাশিয়ার এক নম্বর টার্গেট আমি: জেলেনস্কি

কৃষ্ণসাগরে রাশিয়াকে মোকাবিলায় পশ্চিমাদের অবস্থান নিয়ে কূটনীতিক, গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও ন্যাটোর কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁদের মতে, এই সাগরে রুশ নৌবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করার বিষয়ে ন্যাটো সদস্যদেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। ফলে এ অঞ্চল নিয়ে ন্যাটোর একটি পরিষ্কার ও অর্থপূর্ণ কৌশলের ঘাটতি দেখা গেছে।

কৃষ্ণসাগরে অবস্থান করা নিয়ে আপত্তি জানানো ন্যাটো সদস্যদেশগুলোর একটি তুরস্ক। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ অঞ্চলে নৌ টহল শুরু করে মস্কোকে নিজেদের বিরুদ্ধে উসকে দিতে চায় না তুরস্ক। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে, ন্যাটোর কয়েকটি সদস্যদেশের সুযোগের সীমাবদ্ধতা ও কৃষ্ণসাগর এড়িয়ে অন্য বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার মতো ইস্যুগুলো। তুরস্কের অনাগ্রহের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ইউরোপের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস অব ইউরোপের বিশ্লেষক পল টেইলর বলেন, ‘ন্যাটোর একটি হাত পেছনে বাঁধা রয়েছে।’

Also Read: রাশিয়ার হামলার ফলাফল কী হতে পারে

ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য নয়। এ কারণেই রাশিয়ার হামলা প্রতিরোধ করতে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ নয় তারা। এরপরও গতকাল বৃহস্পতিবার এই জোটের প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ইউরোপের উত্তরাঞ্চল থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত ন্যাটোর ১২০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ ও এক শর বেশি যুদ্ধবিমান উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।

কৃষ্ণসাগরে কেন এ মুহূর্তে ন্যাটোর উপস্থিতি নেই—রয়টার্সের এমন প্রশ্নের জবাব মেলেনি এ জোটের কাছ থেকে। তবে এ জলভাগকে নিয়ে অবহেলার বিষয়টি আগে থেকেই নাকচ করে আসছে ন্যাটো। গত মাসে স্টলটেনবার্গ বলেন, জোটের কাছে কৃষ্ণসাগরের ‘অতীব কৌশলগত গুরুত্ব’ রয়েছে।

Also Read: ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল যেসব ভুয়া ছবি ও ভিডিও

এদিকে কৃষ্ণসাগরে ন্যাটো সেনাদের দেখা না গেলেও, এ সাগরসংলগ্ন দেশ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ায় এবং ইউক্রেনের লাগোয়া স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরিতে প্রায় চার হাজার সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে জোটটির। পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় প্রায় তিন হাজার সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রও।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরএএনডি করপোরেশনের বিশ্লেষক স্টিফেন ফ্লানাগান বলেন, ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার সেনাদের উপস্থিতি ও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রুশ নৌবহরের আধুনিকায়নের ফলে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্য রাশিয়ার অনুকূলে গেছে। এ মুহূর্তে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার বড় যুদ্ধজাহাজগুলো অবস্থান করছে। এর ফলে ইউক্রেনে হামলার ক্ষেত্রে রুশ বাহিনী ভয়ানক হয়ে উঠেছে।

Also Read: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পাকিস্তানের অবস্থান কী

কৃষ্ণসাগর এলাকায় সেনাও মোতায়েন করেছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে পুরোদমে হামলা শুরুর আগেই কৃষ্ণসাগর ও ইউক্রেন সীমান্তজুড়ে দেড় লাখের বেশি রুশ সেনা মোতায়েন করা হয় বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

রাশিয়া–ইউক্রেন সংকট শুরু মূলত ন্যাটোকে ঘিরে। ন্যাটোতে যোগ দিতে দীর্ঘ সময় ধরে তত্পর ইউক্রেন। তবে এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল মস্কো। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে তা তার নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

Also Read: ইউক্রেনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এখন পোল্যান্ড সীমান্তে ছুটছে