ধর্ষণ
ধর্ষণ

স্ত্রীকে অচেতন করে অন্যদের দিয়ে ধর্ষণ করাতেন যুক্তরাজ্যের সাবেক কাউন্সিলর: মামলায় অভিযোগ

যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মাদক সেবন করিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরও পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও ওই নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দাখিল করেছে পুলিশ।

অভিযুক্ত সাবেক ওই কাউন্সিলরের নাম ফিলিপ ইয়ং (৪৯)। তিনি যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাদক প্রয়োগ করে অচেতন করা এবং শিশুদের পর্নোগ্রাফি রাখাসহ মোট ৫৬টি যৌন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ফিলিপ একসময় সুইন্ডন বরা কাউন্সিলের প্রভাবশালী কাউন্সিলর এবং স্থানীয় সরকারের কেবিনেট সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি উত্তর লন্ডনের এনফিল্ডের বাসিন্দা।
সাধারণত এ ধরনের মামলায় ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। তবে এই ঘটনায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ফিলিপের সাবেক স্ত্রী জোয়ান ইয়ং (৪৮) নিজেই নিজের পরিচয় প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই পাশবিক নির্যাতন ও অপরাধগুলো ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে।

ফিলিপ ইয়ংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর সাবেক স্ত্রী জোয়ানকে বিভিন্ন মাদক কিংবা রাসায়নিক দ্রব্য খাইয়ে নিস্তেজ করে ফেলতেন। এরপর নিজে ও অন্য পুরুষদের দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করাতেন। এ ছাড়া গোপনে এসব চিত্র ধারণ করতেন। বিকৃত পর্নোগ্রাফি সংরক্ষণের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

সুইন্ডন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ মঙ্গলবার ফিলিপের সঙ্গে আরও পাঁচ অভিযুক্তকে হাজির করার কথা রয়েছে। অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন—নরম্যান ম্যাকসোনি (৪৭), ডিন হ্যামিল্টন (৪৬), কনার স্যান্ডারসন ডয়েল (৩১), রিচার্ড উইলকিন্স (৬১) ও মোহাম্মদ হাসান (৩৭)।

পুলিশ জানিয়েছে, এই পাঁচজনের বিরুদ্ধেও জোয়ানের ওপর বিভিন্ন মাত্রায় যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।

উইল্টশায়ার পুলিশের উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জিওফ স্মিথ এই ঘটনার তদন্তকে অত্যন্ত ‘জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী জোয়ান অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারা তাঁকে সহায়তা দিয়ে আসছেন এবং তাঁর সম্মতিক্রমেই পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে।

ফিলিপ ইয়ং ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সুইন্ডন বরা কাউন্সিলে কনজারভেটিভ পার্টির কাউন্সিলর ছিলেন। ওই সময় তিনি স্থানীয় সরকারের সংস্কৃতি, পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নবিষয়ক বিভাগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতি ছাড়ার পর তিনি একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা এই পৈশাচিক ঘটনার খবর সামনে আসার পর যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব ও সামাজিক মর্যাদার আড়ালে এক ভয়াবহ অপরাধী চক্রকে আড়াল করে রেখেছিলেন এই সাবেক কাউন্সিলর।