পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বিখ্যাত ‘গ্লোরিয়া ফিউনিকুলার’ লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিদেশি নাগরিকেরাও রয়েছেন। তবে তাঁদের জাতীয়তা নিশ্চিত করা যায়নি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন। দেশটির জরুরি সেবাদাতা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
পর্তুগালের জরুরি চিকিৎসাসেবা কর্তৃপক্ষ জানায়, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্যরা সামান্য আঘাত পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে।
এর আগে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, বিধ্বস্ত গ্লোরিয়া ফিউনিকুলারে কিছু যাত্রী আটকে পড়েছেন। পরে সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সুজা মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সংহতি ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন।
লিসবনের মেয়র কার্লোস মোয়েদাস বলেছেন, রাজধানীবাসী এখন শোকাহত। এটি শহরটির জন্য এক দুর্ভাগ্যজনক মুহূর্ত।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে অ্যাভেনিদা দা লিবার্দাদের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তখন যানটিতে কত যাত্রী ছিলেন, তা জানা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, উজ্জ্বল হলুদ রঙের গ্লোরিয়া ফিউনিকুলার উল্টে গিয়ে প্রায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় সেখানকার লোকজনকে দৌড়ে পালাতে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, ফিউনিকুলার হলো ‘ঢালু ট্রেন’ বা ‘পাহাড়ি কেব্ল ট্রাম’। স্থানীয় লোকজন একে প্রায়ই এলভেদর দে গ্লোরিয়া (গ্লোরিয়া লিফট) বলে ডাকেন।
তেরেসা দ’আভো নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী পর্তুগিজ সংবাদপত্র অবজারভাদরকে বলেন, গ্লোরিয়া ফিউনিকুলার হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ‘আমরা সবাই দৌড়াতে শুরু করি। কারণ, ভেবেছিলাম (বগিটি) নিচেরটিকে আঘাত করবে। কিন্তু এটি মোড়ের কাছে উল্টে গিয়ে একটি ভবনে ধাক্কা খায়।’
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী পর্তুগিজ টেলিভিশন চ্যানেল এসআইসিকে বলেন, যানটি দ্রুতগতিতে নেমে এসে একটি ভবনে আঘাত করে। এরপর কার্ডবোর্ডের বাক্সের মতো ভেঙে যায়। কোনোভাবেই এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
লিসবন কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানাতে পারেনি।
ট্রাম্প পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কারিস জানিয়েছে, ইতিমধ্যে তারা তদন্ত শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ প্রটোকল মেনে চলা হচ্ছে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, ভয়ানক এ দুর্ঘটনায় তিনি হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।