
পোল্যান্ড আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্র সংহতি প্রদর্শন করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।
ইউরোপের পূর্ব সীমান্তের প্রতিরক্ষায় ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ নামের মিশন ঘোষণা।
ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে প্রতিরক্ষা জোরদার করতে যাচ্ছে পশ্চিমা সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)। গত শুক্রবার ন্যাটোর পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ন্যাটো সদস্যদেশ পোল্যান্ডের আকাশে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পোল্যান্ডে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের বিষয়টি নিয়ে জোট মিত্রদের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে দেওয়া এ বিবৃতিতে আকাশসীমা লঙ্ঘনকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে মস্কোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া ন্যাটোর সদস্যদের প্রতি ইঞ্চি ভূখণ্ড রক্ষার অঙ্গীকারও করা হয়েছে।
অবশ্য যৌথ এ বিবৃতি দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়ার ড্রোন ‘ভুলবশত’ পোল্যান্ডে অনুপ্রবেশ করে থাকতে পারে। তবে ট্রাম্পের কথা প্রত্যাখ্যান করে ওয়ারশ জানায়, রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা ভুলবশত নয়। পোল্যান্ড ও ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া দেখতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পোল্যান্ডের পক্ষ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে ওয়াশিংটনের সংহতি চাওয়া হয়।
এ ঘটনায় মস্কো বলেছে, পোল্যান্ডে আঘাত হানার কোনো উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। ইউক্রেনে হামলার সময় ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুতে গত শুক্রবার ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনাকে ‘বেপরোয়া ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। রাশিয়ার এ ধরনের পদক্ষেপ ঠেকাতে তিনি ‘ইস্টার্ন সেনট্রি’ নামের মিশনের ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মিত্রদের আকাশসীমায় রুশ ড্রোন ঢোকার ঘটনা মেনে নিতে পারি না।’
ন্যাটোর নতুন নিরাপত্তা মিশনের বিষয়ে জোটের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও ইউরোপের সুপ্রিম অ্যালাইড কমান্ডার আলেক্সাস গ্রিঙ্কেভি বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উত্তরের বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো থেকে শুরু করে দক্ষিণে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া পর্যন্ত প্রতিরক্ষা জোরদার করা হবে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে এ মিশন শুরু হয়েছে। এতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন ঘাঁটির মধ্যে সমন্বয় করা হবে। ন্যাটোর পূর্ব ইউরোপে ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেনা রয়েছে। তবে নতুন অভিযানে কতজন অতিরিক্ত সেনা অংশ নেবে, তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি।
রুতে বলেছেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি মিশনে অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং আরও কয়েকটি দেশ এতে যোগ দেবে। তিনি আরও বলেন, রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য নিয়ে ন্যাটো এখনো মূল্যায়ন করছে।
ন্যাটোর নিরপত্তা জোরদারের ঘোষণায় অতিরিক্ত কিছু সামরিক সম্পদের বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে—এর মধ্যে রয়েছে ডেনমার্কের দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও একটি ফ্রিগেট, ফ্রান্সের তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান এবং জার্মানির চারটি ইউরোফাইটার জেট। স্পেন জানিয়েছে, তারা আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করবে এবং যুক্তরাজ্য শিগগিরই এ–সংক্রান্ত ঘোষণা করবে। জার্মানি বলেছে, তারা পোল্যান্ডের আকাশসীমায় টহল বাড়িয়েছে।