
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের ওদেসায় হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। হামলায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। হুমকির মুখে পড়েছে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর অবকাঠামো।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলেক্সি কুলেবা বলেছেন, মস্কো এখন পরিকল্পিতভাবে ওদেসায় হামলা করছে। গত সপ্তাহেই তিনি সতর্ক করেছিলেন, যুদ্ধের মোড় এখন ওদেসার দিকে ঘুরে যেতে পারে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এসব হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সমুদ্রপথে ইউক্রেনের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দিতেই মস্কো বারবার হামলা চালাচ্ছে।
চলতি ডিসেম্বরের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ইউক্রেনকে সমুদ্রপথ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবহরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
আঞ্চলিক গভর্নরের তথ্যমতে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ওদেসা বন্দরে রুশ হামলায় একটি বেসামরিক জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে গত রোববার রাতের হামলায় ওদেসার ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে অগ্নিকাণ্ডে কনটেইনারভর্তি বিপুল পরিমাণ আটা ও উদ্ভিজ্জ তেল পুড়ে গেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ওদেসার পূর্বে পিভডেনি বন্দরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৮ জন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আরেকটি হামলায় গাড়িতে থাকা এক নারী ও তাঁর তিন সন্তান নিহত হন এবং ইউক্রেন-মলদোভা সংযোগকারী একমাত্র সেতুটি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
কিয়েভ ও খারকিভের পর ওদেসা ইউক্রেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। জাপোরিঝঝিয়া, খেরসন ও মাইকোলাইভের মতো বন্দরগুলো রুশ বাহিনীর দখলে থাকায় ইউক্রেনের অর্থনীতি এখন পুরোপুরি ওদেসা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল।
হামলার মুখে জেলেনস্কি বলেছেন, ওদেসা অঞ্চলের জন্য বিমানবাহিনীর নতুন একজন কমান্ডার শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া হবে। গত সপ্তাহের শেষে দিমিত্রো কার্পেনকোকে এ পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
কিয়েভ ও খারকিভের পর ওদেসা ইউক্রেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। জাপোরিঝঝিয়া, খেরসন ও মাইকোলাইভের মতো বন্দরগুলো রুশ বাহিনীর দখলে থাকায় ইউক্রেনের অর্থনীতি এখন পুরোপুরি ওদেসা বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে একটি বিশেষ করিডর ব্যবহার করে রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও তুরস্কের উপকূল ঘেঁষে বিশ্ববাজারে শস্য রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেন।
ওদেসায় এমন এক সময়ে রাশিয়া হামলা জোরদার করছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দূতের উপস্থিতিতে শান্তি আলোচনা চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা একটি খসড়া শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।
তবে মস্কো বলেছে, শান্তি পরিকল্পনায় ইউক্রেন ও ইউরোপ কোনো পরিবর্তন আনলে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ভেস্তে যাবে।