Thank you for trying Sticky AMP!!

ইসলাম ধর্ম ও মুসলিমদের সম্পর্কে গির্ট উইল্ডারসের খোলাখুলি বিরূপ মন্তব্য বারবার আলোচনায় এসেছে

নেদারল্যান্ডসে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় থেকে কেন সরে দাঁড়ালেন কট্টরপন্থী উইল্ডারস

নেদারল্যান্ডসে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার উদ্যোগ থেকে পিছু হটলেন দেশটির মুসলিম–বিদ্বেষী জনতুষ্টিবাদী নেতা গির্ট উইল্ডারস। গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাঁর চরম ডানপন্থী দল নাটকীয় জয় পেয়েছে।

সামাজিক মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) গির্ট উইল্ডারস লেখেন, ‘জোটের সব দল সমর্থন করলেই শুধু আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পারি। কিন্তু সেটি হচ্ছে না।’

গত বছরের নির্বাচনে অধিকাংশ ভোটারের সমর্থন পায় উইল্ডারসের দল ফ্রিডম পার্টি (পিভিভি)। কিন্তু জোট সরকার গঠন করতে অন্যান্য দলের সমর্থন প্রয়োজন পড়ে তাদের।

নতুন সরকারের কাঠামো নিয়ে তিনটি দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে পিভিভি।
সর্বশেষ দফার আলোচনা গত মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। এ দফার আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া মধ্যস্থতাকারী আজ বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে তাঁর প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।

গতকাল বুধবার গির্ট উইল্ডারস এক্সে দেওয়া তাঁর পোস্টে বলেন, ‘আমি একটি ডানপন্থী মন্ত্রিসভা চাই। শরণার্থী ও অভিবাসীদের কম আশ্রয়। ডাচ্‌রাই (নেদারল্যান্ডসের অধিবাসী) প্রথম। দেশ ও ভোটারদের প্রতি আমার ভালোবাসা আমার নিজের অবস্থানের চেয়েও বড় ও গুরুত্বপূর্ণ।’

২০১৮ সালে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন আঁকার প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন উইল্ডারস। পরে হত্যার হুমকিতে সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন।

জোট সরকার গঠনের চেষ্টায় এরই মধ্যে মধ্য–ডানপন্থী ভিভিডি, নিউ সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট (এনএসসি) ও বিবিবি ফারমার্স দলের সঙ্গে কয়েক মাস আলাপ–আলোচনা করেছেন উইল্ডারস।

নেদারল্যান্ডসের সরকারি সম্প্রচারকেন্দ্র এনওএস জানায়, চলতি সপ্তাহে এ তিন দলের নেতারা জোর দিয়ে বলেছেন, নতুন সরকারে চার দলের শীর্ষ নেতারা কোনো ভূমিকা না রাখার ব্যাপারে সম্মত হলেই শুধু জোট সরকার গঠনের চেষ্টা এগিয়ে নিতে চান তাঁরা।
ইতিপূর্বে শীর্ষস্থানীয় তিন দলের নেতারা পিভিভির নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

Also Read: নেদারল্যান্ডসে ডানপন্থীদের জয়ের পর উদ্বেগে মুসলমানেরা

এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী পদে দলগুলোর কোনো একক পছন্দের প্রার্থী আছে কি না, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আজ পার্লামেন্টে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

গত বছরের নির্বাচনে উইল্ডারসের দলের বিজয় নেদারল্যান্ডসের রাজনীতিকেই শুধু ঝাঁকুনি দেয়নি; বরং ইউরোপজুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের অন্যতম ও এই জোটের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ।  

বিশ্লেষকেরা বলেন, পিভিভির জয় ইইউর জন্য আতঙ্কের কারণ হলো, দলটি এ জোট থেকে নেদারল্যান্ডসের সদস্যপদ প্রত্যাহার প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

Also Read: নেদারল্যান্ডসের নির্বাচনে বড় জয়ের পথে কট্টর ডানপন্থীরা

প্রসঙ্গত, অভিবাসন ও মুসলিমদের প্রশ্নে উইল্ডারস বরাবরই কঠোর অবস্থান দেখিয়ে আসছেন। ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের সম্পর্কে তাঁর খোলাখুলি বিরূপ মন্তব্য নেদারল্যান্ডসের রাজনীতিতে বারবার আলোচনায় এসেছে। তিনি অতীতে নেদারল্যান্ডসে মসজিদ ও পবিত্র কোরআন নিষিদ্ধ করার ডাক দিয়েছেন। ফলে নির্বাচনে এমন ব্যক্তির প্রতি বিপুল জনসমর্থন দেশটিতে মুসলিমদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।

গত বছরের নির্বাচনে উইল্ডারসের দলের বিজয় নেদারল্যান্ডসের রাজনীতিকেই শুধু ঝাঁকুনি দেয়নি; বরং ইউরোপজুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের অন্যতম ও এই জোটের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ।

নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী মরক্কোর নাগরিকদের নিয়ে ২০১৬ সালে বৈষম্যমূলক কথা বলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন উইল্ডারস। এর আগে পবিত্র কোরআনকে অ্যাডলফ হিটলারের ‘মাইন কাম্ফ’ বইয়ের সঙ্গে তুলনা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

২০১৮ সালে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন আঁকার প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন উইল্ডারস। পরে হত্যার হুমকিতে সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন।

তবে এবার নির্বাচনী প্রচারণার সময় উইল্ডারসকে সুর নরম করতে দেখা গেছে। প্রচারণায় তিনি বলেছিলেন, যাঁর যে ধর্ম, পারিবারিক ইতিহাস, লৈঙ্গিক পরিচয়ই হোক না কেন, তিনি সবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। আর এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টাই বাদ দেওয়ার কথা জানালেন তিনি।