‘জাপাদ-২০২৫’ সামরিক মহড়ায় বেলারুশের একটি এমইই–৩৫ হেলিকপ্টার। আজ সোমবার দেশটির বোরিসভ শহরের কাছে
‘জাপাদ-২০২৫’ সামরিক মহড়ায় বেলারুশের একটি এমইই–৩৫ হেলিকপ্টার। আজ সোমবার দেশটির বোরিসভ শহরের কাছে

রাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়া চলছিল, ‘অবাক করে দিয়ে’ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা

রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া চলছে। এই মহড়া দেখতে বেলারুশে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা। মার্কিনদের উপস্থিতিকে ‘অবাক করে দেওয়ার মতো’ বলে উল্লেখ করেছে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এই কর্মকর্তারা নিজেদের ‘আগ্রহের যেকোনো বিষয়’ দেখতে পারেন বলে জানিয়েছেন বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন।

রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাপাদ–২০২৫’। গত শুক্রবার থেকে নিজেদের সীমানার মধ্যে মহড়াটি শুরু করেছে দুই দেশ। এমন সময় এ মহড়া শুরু করা হলো, যখন দুই দিন আগেই পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করা রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর দেশগুলোতে উত্তেজনা বেড়েছে।

বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি অনুযায়ী, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৩টি দেশের প্রতিনিধিরা মহড়া দেখতে বেলারুশে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ন্যাটোর দুই সদস্যদেশ—তুরস্ক ও হাঙ্গেরির প্রতিনিধিরাও। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাপাদ–২০২৫ মহড়ার আরেকটি সকাল এভাবে শুরু হবে, তা কে–ই বা ভেবেছিল?’

বিদেশি কর্মকর্তাদের মহড়ায় উপস্থিত থাকার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তাকে ভিক্টর খ্রেনিনের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা যায়। বেলারুশে আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদও জানান তাঁরা। এ সময় মার্কিন কর্মকর্তাদের খ্রেনিন বলেন, ‘আপনাদের আগ্রহের সবকিছু দেখাব আমরা। আপনারা যা চান।’

মহড়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর দুই কর্মকর্তা

মহড়ায় মার্কিন কর্মকর্তাদের এই উপস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্র ও বেলারুশের মধ্যে সম্পর্কে অগ্রগতির সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বেলারুশ রাশিয়ারও ঘনিষ্ঠ মিত্র। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেলারুশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইউক্রেনে সেনা পাঠিয়েছিল মস্কো। তখন থেকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ থামাতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সে লক্ষ্যেই বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সসান্দার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাচ্ছেন ট্রাম্প। কারণ, লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে পুতিনের নিয়মিত কথা হয়। গত সপ্তাহে নিজের প্রতিনিধি জন কোলকে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে পাঠিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কোল। এ সময় ট্রাম্পের একটি চিঠি বেলারুশের প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেন তিনি।

ওই বৈঠকে বেলারুশ তাদের কারাগার থেকে ৫২ বন্দীকে মুক্তি দিতে রাজি হয়। বিনিময়ে বেলারুশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহন সংস্থা বেলাভিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা সীমিত করতে রাজি হয়েছে ওয়াশিংটন। কোল জানান, ভবিষ্যতে বেলারুশে মার্কিন দূতাবাস খুলতে এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করতে চান ট্রাম্প।