Thank you for trying Sticky AMP!!

নোবেল পুরস্কার নিয়ে কিছু কথা জেনে নিন

নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় নরওয়েতে। কিন্তু সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্যান্য পুরস্কার সুইডেন থেকে দেওয়া হয়। অক্টোবর শুরু মানে নোবেলের মৌসুম। অক্টোবরের প্রথম সোমবার থেকে ছয় দিনব্যাপী সারা বিশ্বের ছয়জন পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা শুরু হয়।

সেই হিসাবে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পালা। প্রথম দিন ঘোষণা করা হবে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ীর নাম।

১০ অক্টোবর (সোমবার) অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হবে চলতি বছরের মোট ছয়টি শাখায় নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা।

Also Read: নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু কাল থেকে

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে নোবেল পুরস্কারের পাঁচটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, যা অনেকেই হয়তো জানেন না। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সেগুলো তুলে ধরা হলো।

নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু করেছেন কে

চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য ও শান্তিতে পুরস্কারগুলো সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তাঁর রেখে যাওয়া অর্থে প্রদান করা হয়। আলফ্রেড নোবেল সুইডিশ শিল্পপতি এবং ডিনামাইটের উদ্ভাবক ছিলেন। নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।

৫টি শাখার প্রতিটি পুরস্কারের মূল্য ৯ লাখ মার্কিন ডলার। প্রতিবছর ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বিজয়ীর হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁদের একটি সনদ ও একটি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। ১৮৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেল মারা যান। সে জন্য এই তারিখেই বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

Also Read: নোবেল পুরস্কারের মেডেল বেচে ইউক্রেনীয়দের অর্থ পাঠাচ্ছেন রুশ সাংবাদিক

শুরুতে পাঁচটি শাখায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হতো। পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতি। যার আনুষ্ঠানিক নাম ব্যাংক অব সুইডেন প্রাইস। ১৯৬৮ সাল থেকে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আলফ্রেড নোবেলের অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে অবদানের কথা স্মরণ করে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু করে। ১৯০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৬টি শাখায় এখন পর্যন্ত ৬০৯ জন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

বিজয়ীদের নাম কারা জানেন

নিয়ম অনুযায়ী বিচারকেরা ৫০ বছর ধরে এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন না। তাই ২০২২ সালে বিচারকেরা কীভাবে বিজয়ীদের মনোনীত করেছেন এবং কারা তাঁদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন, তা নিশ্চিতভাবে জানতে হলে নাম ঘোষণার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বিচারকেরা চূড়ান্ত ঘোষণার আগে বিজয়ীদের সম্পর্কে ইঙ্গিত দেওয়া এড়াতে চেষ্টা করেন। তবে প্রায়ই মুখ ফসকে অনেক কিছু বলে ফেলেন কেউ কেউ।

ইউরোপের বুকিরা কখনো কখনো সম্ভাব্য শান্তি ও সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীদের বিষয়ে বাজি ধরে থাকেন।

প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেন কে

বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইনপ্রণেতা, পূর্ববর্তী নোবেল বিজয়ী এবং কমিটির সদস্যরাও রয়েছেন।

যদিও মনোনয়নগুলো ৫০ বছরের জন্য গোপন রাখা হয়। তবে আবেদনকারীদের অনেকে নিজেরাই প্রকাশ্যে তাঁদের নাম ঘোষণা করেন। বিশেষ করে, নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আবেদনকারীরা এ কাজ বেশি করেন।

Also Read: নোবেল শান্তিতে মনোনয়ন পেলেন পাকিস্তানের ক্ষুদ্রঋণের আমজাদ

নরওয়ের সঙ্গে যুক্ত কেন

নোবেলের সব পুরস্কার দেওয়া হয় সুইডেনে। শুধু শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় নরওয়েতে। আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছাতেই এমনটি করা হয়। এর পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। আলফ্রেড নোবেল বেঁচে থাকার সময় নরওয়ে ও সুইডেন একটি ইউনিয়নে অর্ন্তভুক্ত ছিল। ১৯০৫ সালে যা ভেঙে যায়।

কখনো কখনো স্টকহোমের নোবেল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে অসলোর শান্তি পুরস্কার কমিটির সম্পর্কে তিক্ততাও দেখা যায়।

নোবেল জিততে কী লাগে

ধৈর্য। এই একটা জিনিসই সবচেয়ে বেশি লাগে নোবেল পুরস্কার জিততে। বিচারকদের স্বীকৃতি পেতে অনেক সময় বিজ্ঞানীদের কয়েক দশক অপেক্ষা করতে হয়।

নোবেলের উইলে বলা আছে, পুরস্কারগুলো তাঁদেরকেই দেওয়া উচিত ‘যাঁরা পূর্ববর্তী বছরে মানবজাতির জন্য সর্বাধিক সুবিধা প্রদান করবে’। শান্তি পুরস্কার কমিটিই একমাত্র যারা নিয়মিতভাবে পূর্ববর্তী বছরে করা অর্জনকে পুরস্কৃত করে থাকে।

নোবেলের উইল অনুসারে পুরস্কারটি ‘যিনি মানবজাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের জন্য সবচেয়ে সেরা কাজ করে থাকেন এবং সেনাবাহিনীর বিলুপ্তি বা হ্রাস ও শান্তি বজায় রাখতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন’ তাঁকেই নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত।

নোবেল পুরস্কার সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য

১৯০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মধ্যে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ১১২টি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই শাখায় এখন পর্যন্ত ১২ জন নারী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

ফ্রেডরিক জি ব্যান্টিং ৩২ বছর বয়সে সবচেয়ে কম বয়সী চিকিৎসাবিজ্ঞানী যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ইনসুলিন আবিষ্কারের জন্য ১৯২৩ সালে তিনি এ শাখায় নোবেল পান। চিকিৎসাবিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি বয়সে নোবেল পেয়েছেন পেটন রৌস। ১৯৬৬ সালে নোবেল পাওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৮৭ বছর।