Thank you for trying Sticky AMP!!

তিন দফা দাবি, ভারতে বিরোধী দলগুলোর রাজ্যসভা বর্জন

গণতন্ত্র হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে কৃষি বিল নিয়ে চাপ বাড়াতে রাজ্যসভা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন বিরোধীরা। আজ মঙ্গলবার সকালেই রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ সরকারকে তিন দফা শর্তের কথা জানিয়ে সভা বয়কটের কথা জানান। তিনি বলেন, তিন দফা দাবি পূরণ না হলে তাঁরা চলতি অধিবেশনে আর সভায় যোগ দেবেন না।

তিন দফা দাবি হলো, বেসরকারি দেশি বা বহুজাতিক সংস্থা কেউই সরকারের বেঁধে দেওয়া সহায়ক মূল্যের কম দামে কোনো ফসল কিনতে পারবে না। এই শর্ত হয় পাস হওয়া বিলে রাখতে হবে নতুবা নতুন আইন আনতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত, সরকারকে সহায়ক মূল্য স্থির করতে হবে স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনে। তৃতীয় শর্ত, ৮ সাংসদের সাসপেনশন প্রত্যাহার করতে হবে।

কৃষি সংস্কারের উদ্দেশ্যে সরকার গত জুন মাসে তিনটি অরডিন্যান্স বা অধ্যাদেশ জারি করেছিল। সেই অধ্যাদেশগুলো আইনে পরিণত করতে চলতি অধিবেশন তিনটি বিল আনা হয়। লোকসভায় সংখ্যাধিক্যের জোরে বিলগুলো সহজে পাস করিয়ে নেওয়া হলেও রাজ্যসভায় সরকার সম্মিলিত বিরোধিতায় অস্বস্তিতে পড়ে। হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় ডিভিশন অনুযায়ী ভোটাভুটিতে না গিয়ে শেষ পর্যন্ত ধ্বনি ভোটে দুটি বিল পাস করান ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে শামিল হন বিরোধীরা। সভায় অশালীন আচরণের অভিযোগে সোমবার অধিবেশনের পরবর্তী দিনগুলোর জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয় আট সদস্যকে।

গতকাল সোমবার বরখাস্তের ওই নির্দেশের পরই শুরু হয় অভূতপূর্ব ঘটনাবলি। শাস্তিপ্রাপ্ত সাংসদেরা রাজ্যসভা ছেড়ে যেতে অস্বীকার করেন। এই টালবাহানায় লোকসভার অধিবেশন শুরু হতে দেরি হয়। সাংসদেরা এর পর চলে যান সংসদ ভবন চত্বরে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির সামনে। শুরু হয় অবস্থান। সোমবার সারা রাত তাঁরা সেখানেই খোলা আকাশের নিচে কাটান। বিভিন্ন দলের সাংসদেরা তাঁদের খাবার সরবরাহ করেন। সকাল হতে না হতেই ফ্লাস্ক ভর্তি চা নিয়ে চলে আসেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ, যিনি ধ্বনি ভোটে বিল দুটি পাস করিয়েছিলেন। হরিবংশের আনা চা-বিস্কুট সাসপেন্ড হওয়া সদস্যরা কেউই খাননি। তাঁকে তাঁরা ‘কৃষক বিরোধী’ বলে অভিহিত করেন। দূতিয়ালিতে ব্যর্থ হয়ে তিনি ফিরে গিয়ে হরিবংশ টুইট করেন, ‘সাংসদদের ব্যবহারে আমি মর্মাহত। খুবই মানসিক চাপে রয়েছি। দুই রাত ঘুমোতে পারিনি।’ হরিবংশের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেন। বলেন, ‘যাঁরা তাঁকে অসম্মান করেছেন তাঁদের জন্যই তিনি চা নিয়ে গেছেন। এতে প্রমাণিত তাঁর হৃদয় কত বড়। তিনি কতটা মহানুভব।’

কৃষি সংস্কার নিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মাঝেই মঙ্গলবার রাজ্যসভায় পাস হয়ে গেল অত্যাবশ্যক পণ্য আইনের সংশোধন। ১৯৫৫ সালের এই আইন সংশোধনের ফলে অত্যাবশ্যক পণ্যের আওতা থেকে বাদ হয়ে গেল চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তৈল বীজ ও ভোজ্য তেল। যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো ঘটনা ছাড়া কৃষিজাত পণ্যের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আর থাকবে না। এই সব পণ্য মজুতদারির কোনো ঊর্ধ্বসীমাও থাকবে না।