
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শুক্রবার বিকেলে কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এখান থেকে সিএএস-বিরোধী পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী এই সিএএ এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) পক্ষে মানুষ আছে কি না, তা প্রমাণের জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোটের দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতা বলেন, ‘২০২৪ সাল পর্যন্ত আর অপেক্ষা কেন? যদি বুকের পাটা থাকে তবে দেশে এই ইস্যুতে একটা গণভোট হয়ে যাক। আর সেই গণভোট করবে নিরপেক্ষ সংস্থা জাতিসংঘ। এখানে জড়িত থাকবে না তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, বাম দল এবং ভারতের অন্য কোনো দল। থাকবে না কোনো সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। এই লক্ষ্যে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার কমিশনের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করতে হবে একটি কমিটি। তারাই করবে এই গণভোট। আমরা দেখতে চাই কটা মানুষ মানছে এই সিএএ এবং এনআরসি, আর কটা মানুষ মানছে না?’
মমতা বলেছেন, ‘সারা দেশ এখন প্রতিবাদের আগুনে জ্বলছে। সবাই নামুন। ভুলে যান রাজনৈতিক দলের পরিচয়। ভুলে যান আপনার ধর্মের নাম কী? ভুলে যান আপনার সম্প্রদায় কী? সবাই একত্রে নামুন। গোটা দেশের সর্বত্র আপনারা নামুন। প্রতিবাদ করুন। দাবি তুলুন মানছি না, মানব না নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আর এনআরসি। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ ভারত। অসাম্প্রদায়িক ভারত।’
গতকাল কলকাতার ধর্মতলার রানী রাশমণি অ্যাভিনিউয়ে এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়ে মমতা বলেন, ‘মোদি সরকার নাগরিকত্ব নিয়ে যতই আইন করুক না কেন, তা কার্যকর হবে না এই বাংলায়। এখানে এনআরসিও কার্যকর হবে না। এখানে যাঁরা বাস করছেন, তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক। তাঁদের জন্য কেন ৭২ বছর পর নাগরিকত্বের প্রশ্ন উঠবে? এটা আমরা মানি না। এটা ভারতের সংবিধানবিরোধী এবং অগণতান্ত্রিক। এটা বাংলার মানুষ মানবে না। আর এই রাজ্যে এটা কার্যকর করতেও দেব না। এই রাজ্যের মানুষ শান্তি চায়। তারা শান্তিতে যুগ যুগ ধরে বাস করে আসছে এই সম্প্রীতির বন্ধনে। তাই বিজেপির জাতি-ধর্মের বিভাজন করার চক্রান্ত মানবে না এই বাংলার মানুষ। তারা রুখবে বাংলার বিভাজনকে। বাংলার মানুষ এক। একসঙ্গে ছিল, একসঙ্গে আছে এবং একসঙ্গে থাকবে।’
মমতা হুঁশিয়ারি দেন, ‘এই বাংলায় আগুন নিয়ে খেলবেন না। সেই খেলা বন্ধ করে দেবে এই বাংলার মানুষ।’