ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ রোববার দেশটির প্রথম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধের উদ্বোধন করবেন। প্রায় ৬০ বছর আগে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা সরদার সরোবর বাঁধটি নিজের ৬৭তম জন্মদিনে উদ্বোধন করে তা জনগণের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করবেন তিনি।
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৬৭তম জন্মদিন। দিনটি উপলক্ষে তাঁর দল বিজেপি দেশব্যাপী ‘সেবা দিবস’ পালন করবে। এদিনই সরদার সরোবর বাঁধের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৬১ সালে বাঁধটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও ১৯৮৭ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজেপির একজন নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বিজেপি-ঘোষিত দেশব্যাপী সেবা দিবসে মেডিকেল ক্যাম্প, রক্তদান কর্মসূচি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে। এই অভিযানে বিজেপিপ্রধান অমিত শাহ রাঁচিতে, বাণিজ্যমন্ত্রী অরুণ জেটলি দিল্লির কীর্তিনগর, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল চেন্নাই ও মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাবেদকর মুম্বাইতে নেতৃত্ব দেবেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ আহমেদাবাদ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে নর্মদায় সরদার সরোবর বাঁধের উদ্বোধনের পর গুজরাটের দাভোইতে এক জনসমাবেশে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর কয়েক মাস পরেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন হবে। এর আগে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পটি শেষ করে বিজেপি নির্বাচনী প্রচারে তা ব্যবহার করতে চায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৬ জুন সরদার সরোবর প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় নর্মদা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এরপর এই বাঁধের দৈর্ঘ্য ১২১ দশমিক ৯২ মিটার থেকে বাড়িয়ে ১৩৮ মিটার করা হয়। বাঁধের ধারণ ক্ষমতাও ১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন কিউবেক মিটার থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন কিউবেক মিটার করা হয়েছে।
সরদার সরোবর নিগম লিমিটেডের (এসএসএনএল) একজন কর্মকর্তা বলেন, এই বাঁধের কারণে এখন রাজ্যের প্রায় ১৮ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে। নর্মদার পানি গুজরাটের নয় হাজার গ্রামের ভেতর দিয়ে খালের মাধ্যমে বয়ে যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘গ্র্যান্ড কুলি’ বাঁধ বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ। এর পরেই সরদার সরোবর বাঁধের অবস্থান। ১ দশমিক ২ কিলোমিটারের এই বাঁধের গভীরতা ১৬৩ মিটার। এখন পর্যন্ত এই বাঁধের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৪ হাজার ১৪১ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, যা থেকে আয় হচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি রুপি। এই আয় বাঁধ নির্মাণ ব্যয়ের দ্বিগুণ। বাঁধের একেকটি ফটকের ওজন ৪৫০ টন। এগুলো বন্ধ করতেই এক ঘণ্টা লাগে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসএসএনএলের একজন কর্মকর্তা বলেন, এই বাঁধ থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাত রাজ্যে পৌঁছাবে। এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎ পাবে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ২৭ শতাংশ ও গুজরাট ১৬ শতাংশ।