পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার তাহেরপুরের জনসভায় বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সশরীরে উপস্থিত থেকে ভাষণ দিতে পারেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দমদম বিমানবন্দর থেকে ১৬ মিনিটের একটি অডিও ভাষণ দিলেও অনেক কথাই বলা হয়নি বলে জানান তিনি।
শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একগুচ্ছ বার্তায় সেই না বলা কথার ব্যাখ্যা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
শুরুতেই নরেন্দ্র মোদি জানান, ‘আরও কিছু বিষয় ছিল, যা আমি রানাঘাটে বলতাম। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে আমি সশরীরে সভায় হাজির হতে পারিনি। এখানে একগুচ্ছ বিষয় নিয়ে আরও কিছু কথা জানাচ্ছি।’
এরপর অডিও ভাষণে না বলা প্রসঙ্গগুলো একে একে তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর অডিও ভাষণে মতুয়াদের উদ্বেগের বিষয়টি অনুচ্চারিত থাকায় অনেকে বিস্মিত হয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সমাজকে বার্তা দিয়ে মোদি লিখেছেন, ‘আমি প্রত্যেকটি মতুয়া ও নমশূদ্র পরিবারকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে আমরা সর্বদা তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকব।’
নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন (সিএএ) প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, তাঁরা (মতুয়া ও নমশূদ্ররা) তৃণমূল কংগ্রেসের দয়ায় এখানে থাকছেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারের আনা সিএএর সৌজন্যে মর্যাদার সঙ্গে ভারতে বাস করা তাঁদের অধিকার। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার শপথ নেওয়ার পরে আমরা মতুয়া এবং নমশূদ্র সমাজের জন্য আরও অনেক কিছু করব।’
একইভাবে যুবভারতীতে লিওনেল মেসিকে নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা নিয়েও মোদির নীরবতা অনেককে বিস্মিত করেছিল। শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। তবে মেসি বা যুবভারতী, কোনো শব্দই উল্লেখ করেননি মোদি।
তিনি লিখেছেন, তৃণমূলের সৌজন্যে পশ্চিমবঙ্গের মতো একটা ফুটবলপ্রেমী রাজ্যের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাটি অজস্র ফুটবলপ্রেমী তরুণের মন ভেঙে দিয়েছে।
এ ছাড়া আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির (স্বাস্থ্যকেন্দ্র), পিএম জন ঔষধালয় (কম দামে ওষুধ), আবাস যোজনা, জল জীবন মিশনের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে কী দেওয়া হয়েছে, তার হিসাবও তুলে ধরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়ে তিনি লেখেন, বিজেপি সুশাসনে বিশ্বাস করে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস কাটমানি এবং কমিশন ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবে না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, অডিও ভাষণে না বলা বিষয়গুলো রাতে পোস্ট করে প্রকৃতপক্ষে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেছেন মোদি। বিজেপির রাজ্য নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, সময়ের অভাবে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তিনি বলতে পারেননি, সেগুলোই সামাজিক মাধ্যমে লিখে জানিয়েছেন।