ভারতের ওডিশা রাজ্যের কন্ধমাল জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআইয়ের (মাওবাদী) অন্যতম শীর্ষ নেতা গণেশ উইকে। উইকে নিহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব ভারতে মাওবাদীদের শীর্ষ নেতৃত্ব কার্যত শেষ হয়ে গেল।
দিনকয়েক আগে ওডিশা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং ভারতের দুই কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী বিএসএফ ও সিআরপিএফ ওডিশার কন্ধমাল ও গঞ্জাম জেলার সীমান্তবর্তী জঙ্গল এলাকা ঘিরে ফেলে। সেখানে মাওবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়।
ওডিশা পুলিশ জানিয়েছে, পাল্টাপাল্টি গোলাগুলিতে গণেশ উইকেসহ মোট চারজন মাওবাদী সদস্য নিহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে দুজন নারী ক্যাডারও ছিলেন।
প্রায় ৭০ বছর বয়সী গণেশ উইকে ছিলেন মাওবাদী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য এবং ওডিশা রাজ্য কমিটির প্রধান। তেলেঙ্গানার নালগোন্ডা জেলার বাসিন্দা উইকে দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে সশস্ত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি মূলত ‘পাক্কা হনুমন্তু’, ‘চামরু’ ও ‘রুপা—এমন নানা ছদ্মনামে কাজ করতেন।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মতে, তিনি মাওবাদী রণকৌশল নির্ধারণ এবং ওডিশা ও সংলগ্ন অঞ্চল অর্থাৎ ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার কিছু অংশে সংগঠন মজবুত করার প্রধান কারিগর ছিলেন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ১ কোটি ১০ লাখ রুপি।
এর আগে দলের সম্পাদক বাসবরাজসহ প্রায় গোটা শীর্ষ নেতৃত্ব মধ্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন অথবা আত্মসমর্পণ করেছেন। সম্প্রতি মারা যান শীর্ষ আদিবাসী কমান্ডার মাদভি হিদমা, যিনি মাওবাদীদের সামরিক নেতৃত্বের প্রধান প্রতিনিধি ছিলেন।
বামপন্থী এই নিষিদ্ধ ও সশস্ত্র সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করার যে দাবি ভারতের কেন্দ্র সরকার অতীতে করেছে, আজ থেকে এক বছর আগেও সেই দাবি অবাস্তব বলে মনে হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে, আগামী বছরের পর সিপিআই মাওবাদী আপাতত নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবে আদর্শগতভাবে তারা টিকে থাকবে বলে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তারা অতীতে প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন।