দেইর আল–বালাহ এলাকায় ইসরায়েলের হামলায় পর ধোঁয়া উঠছে। আজ সোমবার গাজা উপত্যকায়
দেইর আল–বালাহ এলাকায় ইসরায়েলের হামলায় পর ধোঁয়া উঠছে। আজ সোমবার গাজা উপত্যকায়

দেইর আল–বালাহে ইসরায়েলের স্থল অভিযান, আট বাড়ি–তিন মসজিদে হামলা

গাজার মধ্যাঞ্চলে দেইর আল-বালাহ এলাকায় প্রথমবারের মতো স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। সেখানে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংক। বাড়ি ও মসজিদে করা হচ্ছে গোলাবর্ষণ। হামলার আগে দেইর আল-বালাহে স্থল অভিযানের হুমকি দিয়ে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গতকাল রোববার জানায়, গাজায় স্থল অভিযান বিস্তৃত করবে তারা। এর অংশ হিসেবে দেইর আল-বালাহে অভিযান চালানো হবে। এ এলাকায় ৫০–৮০ হাজার ফিলিস্তিনি রয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তাসংক্রান্ত সংস্থা (ওসিএইচএ)। গাজার মোট জনসংখ্যা ২০ লাখের বেশি।

পরে আজ সোমবার দেইর আল-বালাহে অবস্থান করা হামিদ আবু মুগসিব (৫০) বলেন, রোববার রাতভর সেখানে ব্যাপক গোলা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে দেইর আল-বালাহের দিকে ইসরায়েলের ট্যাংক আসতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি পরিবার নিয়ে দেইর আল-বালাহের উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে পালিয়ে এসেছেন। কোনো জায়গা নিরাপদ নয়।

বিস্ফোরণে পুরো এলাকা ভূমিকম্পের মতো কাঁপছিল বলে জানিয়েছেন দেইর আল-বালাহের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আবু সালিম (৪৮)। তিনি বলেন, সেখানে বাস্তুচ্যুত অনেক ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের ওপর হামলার শঙ্কা করা হচ্ছে। দেইর আল-বালাহের আল বারাকা এলাকা থেকে অনেক পরিবার সাহায্য চেয়ে ফোন করছে বলে জানিয়েছেন গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল।

গাজার চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ট্যাংকের গোলা দেইর আল-বালাহে আটটি বাড়ি ও তিনটি মসজিদে আঘাত হানে। এতে অন্তত তিনজন নিহত হন। আহত হয়েছেন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে দেইর আল-বালাহের উপকূল এলাকা ও খান ইউনিসের দিকে পালিয়ে যাচ্ছেন। আজ খান ইউনিসেও হামলা চালিয়ে অন্তত পাঁচজনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।

২১ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির বাহিনী জানিয়েছে, এর আগে তারা দেইর আল-বালাহে স্থল অভিযান চালায়নি। ইসরায়েলি একটি সূত্রের তথ্যমতে, দেশটির সামরিক বাহিনীর ধারণা ছিল, সেখানে ইসরায়েলের জিম্মিদের রাখা হয়েছে। এ কারণে এত দিন হামলা হয়নি। গাজায় এখনো বন্দী ৫০ জিম্মির মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। ইসরায়েল থেকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় আড়াই শ জনকে। সেদিন থেকেই গাজায় নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের চলমান হামলায় উপত্যকাটিতে প্রায় ৫৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ।