Thank you for trying Sticky AMP!!

অস্ত্রে সজ্জিত ইসরায়েলের একটি যুদ্ধবিমান

ইরানে ব্যাপক হামলা করতে চেয়েছিল ইসরায়েল, যে কারণে সিদ্ধান্তে বদল

ইরানের তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে গত শুক্রবার দেশটিতে ব্যাপক পরিসরে হামলা চালাতে চেয়েছিল ইসরায়েল। হামলার পরিকল্পনা ছিল ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছের সামরিক ঘাঁটিতেও। তবে পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসরায়েল সরকার।

ইসরায়েলের তিন কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মিত্রদেশের কূটনৈতিক চাপে ইরানে বড় ধরনের হামলার সিদ্ধান্ত বাতিল করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের ছোড়া প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ঠেকিয়ে দেওয়াও ব্যাপক হামলা না চালানোর পেছনে একটি কারণ হিসেবে কাজ করেছে।

Also Read: দীর্ঘ ছায়াযুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসেছে ইরান–ইসরায়েল

১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরান কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে ১৪ এপ্রিল ইসরায়েল লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। ওই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশ ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর কয়েক দিন বাদেই শুক্রবার ভোররাতে ইরানের ইস্পাহান শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল।

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সূত্রে প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ুক, তা চায়নি ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের কাছের সামরিক ঘাঁটিসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে বড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। এতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। এমন হামলা চালানো হলে তা এড়িয়ে যাওয়া তেহরানের পক্ষে কঠিন ছিল। ফলে দেশটির পক্ষ থেকে শক্তিশালী পাল্টা হামলা চালানোর ঝুঁকি বাড়ত।

Also Read: ইরানের ইস্পাহানে ইসরায়েলের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির ছবি প্রকাশ

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সূত্রে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ুক, তা চায়নি ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা। তাই ইরানে ব্যাপক হামলা না চালানোর জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও একই অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এর জেরেই নিজের পরিকল্পনা বাতিল করেন নেতানিয়াহু।

ইরানের ইস্পাহান শহরের জারদানজান এলাকায় একটি পারমাণবিক স্থাপনায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ইসরায়েল ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, গত শুক্রবার ইরানের পশ্চিমে কয়েক শ কিলোমিটার দূর থেকে ‘অল্প কিছু ক্ষেপণাস্ত্র’ ছোড়ে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধন্দে ফেলতে ‘কোয়াডকপ্টার’ নামে পরিচিত হামলাকারী ড্রোনও ছোড়া হয়। যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি ইরানের একটি বিমানবিধ্বংসী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানে। প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে—তা জানার পর দ্বিতীয় আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে থাকতেই ধ্বংস করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল অত্যধিক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো।

ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে ১৫ এপ্রিল ইরানে হামলা চালাতে চেয়েছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে ১৫ এপ্রিল ইরানে হামলা চালাতে চেয়েছিল। এর জেরে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হামলা বাড়াতে পারে’—এমন শঙ্কায় পরে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। তবে শুক্রবারের হামলার ক্ষেত্রেও একই শঙ্কা ছিল কি না, তা জানানো হয়নি।

Also Read: ফিলিস্তিনের পতাকায় লাথি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ, ইসরায়েলি আহত

শুক্রবারের হামলার দায় অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি ইসরায়েল। তবে হামলা যে ইসরায়েলই চালিয়েছে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। এই হামলার পর তেমন উচ্চবাচ্য করেনি তেহরানও। এমনকি হামলার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেনি তারা। ফলে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল আরও সংকটের দিকে এগোনোর ঝুঁকি অনেকটাই কমেছে।

Also Read: ‘র‌্যামপেজ’ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল