
ফিলিস্তিনের গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফা এবং বেশ কয়েকটি পৌর এলাকা খালি করে বাসিন্দাদের অন্যত্র চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গতকাল সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এ কথা বলেছেন।
গত মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনারা গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা করা শুরু করে দিয়েছেন। এর আগে হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের হামলায় রাফা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা প্রথমে রাফা থেকে চলে আসতে সম্মত হয়েছিলেন। মিসর থেকে এ এলাকায় অস্ত্র পাচার হয় দাবি করে তাঁরা জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় তাঁদের উপস্থিতি প্রয়োজন।
গত ১৮ মার্চ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আবার গাজায় বিমান হামলা শুরু করে। এ হামলায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে হামাস–নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য দপ্তর। আর গত ৪৮ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৮০ জন।
স্বাস্থ্য দপ্তরের দাবি, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ৩৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর মধ্যে কতজন হামাস সদস্য ও কতজন বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা জানায়নি স্বাস্থ্য দপ্তর। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করছে, এই হিসাব মোটের ওপর ঠিক আছে।
গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে অর্ধেক শিশু। জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৩২২ শিশুর মৃত্যু ও ৬০৯ জন আহত হয়েছে। গতকাল ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে বলেছে, এই শিশুরা মূলত ভেঙে পড়া বাড়ি বা তাঁবুতে ছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে বোমা হামলা ও ত্রাণ সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় ১০ লাখ শিশু হুমকির মুখে পড়েছে। যুদ্ধবিরতি গাজার শিশুদের কাছে আশার আলো নিয়ে এসেছিল। কিন্তু সেই শিশুরা আবার নতুন করে ভয়ংকর সহিংসতা চক্রের মধ্যে পড়েছে।
২ মার্চ থেকে গাজায় কোনো ত্রাণ সাহায্য পাঠাতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে খাবার, পানি ও চিকিৎসা–সংকট বেড়েছে।