ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসার
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসার

ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল ভেনেজুয়েলা

ভেনেজুয়েলা সরকার দেশটিতে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতা ঘিরে দেশ দুটির মধ্যে চরম বিরোধ চলছে। এর জেরেই ভেনেজুয়েলায় ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর সরকারপ্রধানকে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে ভেনেজুয়েলার জাতীয় পরিষদে ভোটাভুটি হয়। পরিষদের সদস্যরা ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিসেসারকে অবাঞ্ছিত করার পক্ষে ভোট দেন। প্রধানমন্ত্রী কমলা সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন। এ জন্য দেশটিতে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রীকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এমন উদ্যোগ নেওয়ার এক দিন আগে বিষয়টি নিয়ে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিল বার্তা সংস্থা এএফপি। জবাবে কমলা বলেন, ‘তারা কেন ভাবল যে আমি ভেনেজুয়েলায় যেতে চাইব?’

ভেনেজুয়েলা ও ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ছোট একটি উপসাগর দিয়ে বিভক্ত। সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গাটিতে এটি মাত্র ১১ কিলোমিটার (প্রায় ৭ মাইল) চওড়া। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক তৎপরতা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি ও মাদক পাচারের নৌকাগুলোয় হামলার ঘটনায় যে কয়জন আঞ্চলিক নেতা প্রশংসা করেছেন, কমলা তাঁদের একজন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরপর গত ২ সেপ্টেম্বর কমলা বলেছিলেন, ‘বেশির ভাগ দেশের সঙ্গে আমিও খুশি যে মার্কিন নৌবাহিনী তাদের অভিযানে সফল হচ্ছে। পাচারকারীদের (মাদক) প্রতি আমার কোনো সহানুভূতি নেই। মার্কিন বাহিনীর উচিত তাদের সবাইকে সহিংসভাবে হত্যা করা।’

কমলার এমন অবস্থান তাঁকে মাদুরো সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ফেলেছে। এ সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল পিন্টো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেন, ‘মার্কিন বাহিনীর হামলা আমাদের মাথার ওপর ঝুলে থাকা একটি অবৈধ ও সম্পূর্ণ অনৈতিক সামরিক হুমকি।’

আইনবিশেষজ্ঞরা মার্কিনদের এসব বোমাবর্ষণকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে বলেও বলেছেন তাঁরা। এ পর্যন্ত ১৪টি সমুদ্রগামী নৌযানে ১৩টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব নৌযানের বেশির ভাগই ছোট নৌকা।

ওই অঞ্চলে মার্কিন হামলায় ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁরা সবাই মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত—এমন কোনো প্রমাণ এখনো প্রকাশ্যে উপস্থাপন করা হয়নি। এর মধ্যেই কমলাকে ভেনেজুয়েলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার কথা জানা গেল।

এর আগে গতকাল এএফপি জানায়, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো নিজ ভূখণ্ড থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ‘গণবিতাড়নের’ কথা বিবেচনা করছে। তাঁদের বেশির ভাগই ভেনেজুয়েলার নাগরিক।

এএফপির পর্যালোচনা করা স্মারক অনুযায়ী, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর হোমল্যান্ড সিকিউরিটিমন্ত্রী রজার আলেকজান্ডার আটক হওয়া ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ যেকোনো পরিকল্পিত মুক্তি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।