রাতে বাড়ির উঠানে বা সামনেই বিশাল খোলা মাঠে বসে গল্প করছেন। হঠাৎ দেখলেন দূর আকাশ থেকে চোখধাঁধানো আলো ছড়িয়ে নেমে আসছে উড়ন্ত কোনো যান বা ইউএফও (অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু)। খুব কাছে এসে আবার হাওয়ায় মিলিয়ে গেল সেটি। এ ঘটনা দেখে তো চোখ ছানাবড়া। এটি কোনো কল্পকাহিনি নয়। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। আর এসব ঘটনা দিনে দিনে মানুষের মনে ভিনগ্রহবাসী নিয়ে প্রশ্ন আরও জোরালো করেছে।
তবে ভিনগ্রহবাসী নিয়ে প্রশ্ন, কৌতূহল সম্ভবত সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির আকাশে গত ১৭ বছরে ১৪৪টি ইউএফও দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ছাড়া বাকি কোনোটিরই কোনো ব্যাখ্যা হাজির করতে পারেননি দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী, গবেষকসহ বিশেষজ্ঞরা। কাজেই ইউএফও, ভিনগ্রহবাসী নিয়ে ধাঁধা রয়েই গেছে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বলছে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিমানচালকেরা আকাশে বিভিন্ন সময় যে কয়েক ডজন ইউএফওর দেখা পেয়েছেন, সেগুলোর কোনো ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত দাঁড় করানো যায়নি।
এ নিয়ে গত শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইউএফও নিয়ে ১৪৪টি ঘটনা তারা জানতে পেরেছে। এর মধ্যে একটি ছাড়া বাকি ঘটনাগুলোর কোনো ব্যাখ্যা তাঁরা পাননি। প্রতিবেদনে উড়োযানগুলো ভিনগ্রহ থেকে এসেছে—এমন সম্ভাবনাও বাতিল করে দেওয়া হয়নি।
মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, আকাশে বিভিন্ন সময়ে হঠাৎই অচেনা বস্তু বা উড়োযান ওড়াউড়ি করতে দেখা যায়। এ নিয়ে প্রতিবেদন দাবি করেছিল কংগ্রেস। পরে ইউএফও দেখার খবর খতিয়ে দেখতে গত বছরের আগস্ট মাসে ‘আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা টাস্কফোর্স’ গঠন করে পেন্টাগন। তারা বলেছে, টাস্কফোর্সকে ওই সব ঘটনা চিহ্নিত, বিশ্লেষণ ও শ্রেণিবিন্যস্ত করতে বলা হয়। সেই সঙ্গে ইউএফও আসলে কী, এর প্রকৃতি ও সেগুলো কোথা থেকে এসেছে ইত্যাদি বিষয়ে রহস্য উদ্ঘাটন করাও ছিল অন্যতম কাজ।
অন্তর্বর্তীকালীন ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা (ইউএপি)’–এর ১৪৪টি ঘটনার অধিকাংশ ঘটেছে গত দুই বছরে। এর আগে মার্কিন নৌবাহিনী একটি ‘স্ট্যান্ডার্ডাইজড রিপোর্টিং’ ব্যবস্থা চালু করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪৩টি ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটন করার মতো পর্যাপ্ত তথ্যের ঘাটতি ছিল। তবে একটি ঘটনার ব্যাপারে বলা যায়, খুব সম্ভবত সেটি ছিল একটি বড় বেলুন।