
যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র আইন কঠোরের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে লাখো শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ১৮টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ প্রতি ৬০ ঘণ্টায় একটি করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন অবস্থায় অস্ত্র আইন সংশোধনের দাবি তুলেছে শিক্ষার্থীরা।
গত মাসে ফ্লোরিডার বন্দুক হামলার ঘটনার পর ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’ বা ‘জীবনের জন্য র্যালি’ শীর্ষক এই আন্দোলন গড়ে ওঠে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে ওই বন্দুক হামলার ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়। স্কুল থেকে বিতাড়িত সাবেক এক ছাত্র ওই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে ওই বন্দুক হামলার ঘটনা বেঁচে যাওয়া শিক্ষা শিক্ষার্থীরা এই র্যালির আয়োজন করে। তাঁরা অস্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর নেন, স্লোগান দেয়। তারা জনসাধারণের প্রতি অস্ত্রের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া অনুরোধ জানায়। একই সঙ্গে শিশুদের প্রতি যত্নবান হতে আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানায়।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল শনিবার ছাত্রসংগঠনগুলোর ডাকা এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ লাখের মতো মানুষ অংশ নেয়। সারা দেশ থেকে আসা বিক্ষোভকারীরা ওয়াশিংটন ডিসিতে পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউতে জড়ো হন। হাতে হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। লেখা ছিল ‘প্রটেক্ট কিডস নট গানস’, ‘অ্যাম আই নেক্সট’।
মার্কিন জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে একই সময়ে লন্ডন, এডিনবরা, জেনেভা ও সিডনিতেও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের আরও ৮০০ স্থানে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, ওয়াশিংটন ডিসিতে এই আন্দোলন চলাকালে বক্তব্য দেন ফ্লোরিডা হামলায় বেঁচে যাওয়া এক শিক্ষার্থী এমা গঞ্জালেজ। বক্তব্যের শুরুতে সে নিহত সবার নাম স্মরণ করেন। এরপর চুপ হয়ে যান। তার গাল বেয়ে অশ্রু ঝরছিল। এ সময় বিক্ষোভ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বেশির ভাগই ছিলেন অশ্রুসিক্ত ও নীরব। সে ৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড ধরে বক্তব্য দেয়। কারণ ফ্লোরিডার ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে মাত্র ৬ মিনিট ২০ সেকেন্ডে।
সামান্ত ফুয়েতেজ নামের একজন শিক্ষার্থী তাদের সঙ্গে সবাইকে যোগ দেওয়া আহ্বান জানায়। সে বলে অস্ত্র যেন শুধু নিরাপদ হাতেই থাকেই।
পার্কল্যান্ডের আরেক শিক্ষার্থী ডেলাইনি টার বলে, ‘আমরা আমাদের নিহত বন্ধুদের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’
তাদের এই বিক্ষোভ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল। তাঁর মেয়েও ওয়াশিংটনের একটি স্কুলের শিক্ষার্থী। ওবামা টু্ইট করে বলেন, ‘কিশোর-কিশোরীদের এই কর্মসূচি আমাকে ও মিশেলকে উৎসাহিত করেছে। তোমরা আমাদের সামনে নিয়ে যাবে। লাখ লাখ মানুষের পরিবর্তনের দাবির সামনে কোনো কিছুই দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।’