সাময়িকী কিংবদন্তিখ্যাত অ্যানা উইন্টোর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভোগ’ সাময়িকীর সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘ ৩৭ বছর দায়িত্ব পালনের পর বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে এক কর্মী সভায় এ ঘোষণা দেন ফ্যাশন জগতের প্রভাবশালী এই ব্যক্তিত্ব।
৭৫ বছর বয়সী অ্যানা উইন্টোরকে আধুনিক ফ্যাশনের অন্যতম রূপকার এবং গ্ল্যামার দুনিয়ার দিকনির্দেশক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর ছোঁয়ায় ‘ভোগ’-এর প্রচ্ছদ হয়ে উঠত সমসাময়িক ফ্যাশনের চূড়ান্ত ঘোষণাপত্র। আর ভেতরের তারকাবহুল পাতাগুলোর ওপর ছিল তাঁর নিরঙ্কুশ প্রভাব।
ফ্যাশনের বাইবেলখ্যাত ‘ভোগ’ সাময়িকীর দৈনন্দিন সম্পাদনার দায়িত্বে উইন্টোরকে আর দেখা যাবে না। তবে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কন্দে নাস্ট তাঁর অবসরের ঘোষণা তাৎক্ষণিক খণ্ডন করে বলেছে, তিনি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন এবং ‘ভোগ’-এর ‘গ্লোবাল এডিটরিয়াল ডিরেক্টর’ হিসেবে থাকছেন।
নিউইয়র্কে কর্মীদের সঙ্গে ওই বৈঠকে উইন্টোর বলেন, ‘“ভোগ” যুক্তরাষ্ট্রে শিগগিরই নতুন সম্পাদকীয় প্রধান নিয়োগ দেবে।’
নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত বক্তব্যে উইন্টোর বলেন, ‘এটা আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তবে আমি এখনই আমার অফিস ছেড়ে যাচ্ছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে বৈশ্বিক নেতৃত্বের দিকে আমার পূর্ণ মনোযোগ থাকবে। আমাদের অসাধারণ সম্পাদনা দলগুলোর সঙ্গে বিশ্বজুড়ে আমি কাজ করব।’
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত উইন্টোর ২০০৩ সালে প্রকাশিত সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘দ্য ডেভিল ওয়্যারস প্রাডা’ এবং ২০০৬ সালের একই নামের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান। এতে মেরিল স্ট্রিপ অভিনীত চরিত্র ‘মিরান্ডা প্রিস্টলি’ ছিলেন সাময়িকীর একজন জাঁদরেল সম্পাদক। এ চরিত্রের অনুপ্রেরণা ছিলেন উইন্টোর নিজেই।
২০১৭ সালে ব্রিটিশ সরকার উইন্টোরকে ‘ডেম’ উপাধিতে ভূষিত করে। এরপর ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি অভিজাত ‘কম্পেনিয়ন অব অনার’ পদকে ভূষিত হন। ওই সময় লন্ডনে রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে সম্মাননা গ্রহণের সময় উইন্টোর তাঁর চিরচেনা রোদচশমা খুলে রেখেছিলেন। রাজাকে তিনি বলেছিলেন, কাজ ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই তাঁর।