
বাংলাদেশের এক নাগরিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের একটি ফেডারেল আদালতে ৯টি অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের নাম জাহিদ হাসান। ২৯ বছর বয়সী এ যুবক রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।
জাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অনলাইনে জাল মার্কিন পাসপোর্ট, সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড এবং ড্রাইভার্স লাইসেন্স বিক্রি করতেন। ঢাকায় বসে অনলাইনে তিনি এসব করতেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর ১২৫ বছর কারাদণ্ড এবং সাড়ে ২২ লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে।
মামলাটি পরিচালনা করছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউএস অ্যাটর্নি বেঞ্জামিন হারগ্রোভ। তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে এফবিআইয়ের বিলিংস ডিভিশন এবং সল্ট লেক সিটি সাইবার টাস্ক ফোর্স। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট মামলাটির তদন্তে কাজ করছে। এফবিআই নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছে।
মন্টানার অ্যাটর্নি অফিস গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে অ্যাটর্নি কার্ট আলমে জানান, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি ওয়েবসাইট ডোমেইন জব্দ করেছে। ওয়েবসাইটগুলো হলো— www.techtreek.com, www.egiftcardstorebd.com এবং www.idtempl.com। এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জাল পরিচয়পত্র বিক্রি করা হতো। ওয়েবসাইটগুলোতে এখন এফবিআইয়ের জব্দ করার বার্তা দেখা যাচ্ছে।
জাহিদের বিরুদ্ধে আনা প্রথম আটটি অভিযোগের মধ্যে ছয়টি জাল পরিচয়পত্র স্থানান্তর এবং দুটি জাল পাসপোর্ট ব্যবহার। প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ১৫ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে। নবম অভিযোগ সামাজিক নিরাপত্তা প্রতারণা—এর কারাদণ্ড সর্বোচ্চ ৫ বছর। প্রতিটি অভিযোগে আড়াই লাখ হিসাবে সর্বমোট সাড়ে ২২ লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে। এসব অভিযোগের মামলায় তিন বছরের তত্ত্বাবধানমূলক জেল মুক্তির বিধান রয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জাহিদ হাসান বাংলাদেশ থেকে ‘TechTreek’ এবং ‘EGiftCardStoreBD’ নামে ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন। এসব সাইটে জাল মার্কিন পাসপোর্টের টেমপ্লেট মাত্র ১২ ডলারে, সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড ৯ দশমিক ৩৭ ডলারে এবং মন্টানা ড্রাইভার্স লাইসেন্স ১৪ দশমিক লারে বিক্রি হতো।
মন্টানার জাস্টিস বিভাগের ওয়েবসাইটে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রাহকেরা বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে পেমেন্ট করতেন। চার বছরে বিশ্বের ১ হাজার ৪০০-এর বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে জাহিদ হাসান ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৫ কোটি টাকা) আয় করেছেন।
২০২৫ সালের ১৩ মে মন্টানার বোজম্যান শহরের এক ব্যক্তির কাছ থেকে বিটকয়েন নিয়ে জাহিদ জাল টেমপ্লেট পাঠান। এটাই তদন্তের মূল সূত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।