চট্টগ্রামে জন্মনিবন্ধন সনদ জালিয়াতির ঘটনায় আরও দুজন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন সনদ নেওয়ার অভিযোগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নগরের ইপিজেড এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, চট্টগ্রাম।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের অতিরিক্ত উপকমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার মনি দেবী ও রাকিবের কাছ থেকে দুটি কম্পিউটার এবং একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মনি দেবী গতকাল ১১ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর জন্মনিবন্ধন সনদের মূলকপি নিতে আসেন। যাচাই–বাছাই করে দেখা যায় তাঁর সনদটি অবৈধ। ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন যে ইপিজেড এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি সনদটি নিয়েছেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসিফ মহিউদ্দীন বলেন, ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে স্বীকার করেছেন রাকিব। এখন পর্যন্ত অনেক ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করেছেন তিনি।
এর আগে সনদ জালিয়াতির ঘটনায় সোমবার রাতে নগরের পতেঙ্গা এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। পরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত সাত থেকে আট মাসে পাঁচ হাজারের বেশি জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছে চক্রটি। একেকটি সনদের জন্য ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা নিত চক্রটি।
মনি দেবী গতকাল ১১ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর জন্মনিবন্ধন সনদের মূলকপি নিতে আসেন। যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় তাঁর সনদটি অবৈধ। ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন যে ইপিজেড এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি সনদটি নিয়েছেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৮ থেকে ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উত্তর পতেঙ্গা, আন্দরকিল্লা, উত্তর পাহাড়তলী, দক্ষিণ কাট্টলী ও দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের আইডি ব্যবহার করে সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে ৫৪৭টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হয়। গত শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোর পক্ষ থেকে থানায় জিডি হওয়ার পর ছায়াতদন্তে নামে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। জালিয়াতির ঘটনায় নগরের খুলশী, হালিশহর ও পাহাড়তলী থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল নগরের লালখান বাজার ওয়ার্ডে ১৩৩টি জন্মসনদ অবৈধভাবে ইস্যু হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
এর আগে ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধন আইডি প্রথম বেহাত হয়। ওই দিন দেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের অফিশিয়াল সার্ভারের আপগ্রেডেশনের কাজ চলার সময় হ্যাক করে উত্তর পতেঙ্গা, চকবাজার ও দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে ১৮টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হয়। এর মধ্যে ১২টি ছিল রোহিঙ্গাদের নামে। ওই ঘটনায় পতেঙ্গা ও চকবাজার থানায় তিনটি মামলা করেন সংশ্লিষ্ট জন্মনিবন্ধন সহকারীরা।