নরসিংদীর বাড়িতে পৌঁছেছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত বুলবুলের লাশ

সন্ধ্যায় নরসিংদীর সদর উপজেলার নন্দীপাড়া গ্রামে বুলবুলের বাড়িতে এসে পৌঁছায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত শিক্ষার্থী মো. বুলবুল আহমেদের (২২) লাশ নরসিংদীতে পৌঁছেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সদর উপজেলার নন্দীপাড়া গ্রামে বুলবুলের বাড়িতে এসে পৌঁছায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স। এর আগে দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে প্রথম জানাজার পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে গাজী-কালু টিলা লাগোয়া ‘নিউজিল্যান্ড’ এলাকায় বুলবুল ছুরিকাহত হন। পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত পৌনে আটটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর থেকে আজ বিকেলে পরিবারটিকে সান্ত্বনা দিতে তাঁর বাড়িতে যান স্বজন, এলাকাবাসী, সহপাঠীসহ শতাধিক মানুষ।

আরও পড়ুন
সন্ধ্যায় বুলবুলের লাশ নরসিংদীতে পৌঁছালে স্বজন ও সহপাঠীদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়
ছবি: প্রথম আলো

নিহত বুলবুল নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের নন্দীপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহাব মিয়ার ছেলে। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের ২১৮ নম্বর কক্ষে। বুলবুল চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। বাবা ওয়াহাব মিয়া আট মাস আগে মারা যান। এর পর থেকেই পরিবারটির আশা-ভরসা ছিলেন বুলবুল।

বুলবুলের লাশ নরসিংদীর ভেলানগরে এসে পৌঁছালে স্বজন, এলাকাবাসী ও সহপাঠীদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। বাড়িটিতে ঢোকার রাস্তা সরু গলি হওয়ায় লাশ বাড়িতে নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক–সংলগ্ন ভেলানগরের মাইক্রোস্ট্যান্ডে দ্বিতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। পরে বাবার কবরের পাশে তাঁর লাশ দাফনের জন্য মাধবদীর খড়িয়া এলাকায় রওনা হন স্বজনেরা।

আরও পড়ুন

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে জেএসসি পাস করেন বুলবুল। এরপর শহরের সাটিরপাড়া কে কে ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। পরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান।

বুলবুলের মা ইয়াসমিন বেগম মনে করেন, কোনো ছিনতাইকারী তাঁর ছেলেকে হত্যা করেনি। বরং ছুরিকাঘাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে অন্যদিকে ধাবিত করতে এসব বলা হচ্ছে। তিনি বলছেন, হত্যাকাণ্ডের সময় বুলবুলের সঙ্গে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়া এক মেয়ে ছিলেন। তাঁর প্রেমিক প্রতিহিংসার জেরে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক–সংলগ্ন ভেলানগরের মাইক্রোস্ট্যান্ডে বুলবুলের দ্বিতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে আজ বিকেলে ভেলানগর বাজারসংলগ্ন সড়কে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বুলবুলের কলেজের সহপাঠী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে বুলবুল হত্যার বিচারের দাবি জানান।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন