মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা: যা না জানলেই নয়
মেডিকেল কলেজে ভর্তি–ইচ্ছুক প্রিয় শিক্ষার্থীরা, কেমন আছ? তোমাদের ভর্তি পরীক্ষা একেবারেই দোরগোড়ায়। তোমাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এমন পাঁচটি বিষয় নিয়ে আজকে আলোচনা করব এখানে।
১. রিভিশন
বইগুলো শেষবারের মতো দ্রুত রিভিশন দিয়ে ফেলতে হবে। তবে নতুন করে কিছু বুঝতে যাওয়া কিংবা ডিটেইল পড়ার সময় এখন নয়।
২. গুজব, প্ররোচনা অথবা ফাঁদ
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা শতভাগ স্বচ্ছ হয়। তাই কোনো গুজব, যেমন প্রশ্ন ফাঁস কিংবা পাস করিয়ে দেওয়া কিংবা চান্স পাইয়ে দেওয়া, এমন প্ররোচনায় পা বাড়ানো যাবে না। এ–জাতীয় ফাঁদের বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক—সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পরীক্ষা নিয়ে ভয় পাওয়া যাবে না, প্রশ্ন কঠিন হলে সবার জন্যই কঠিন হবে। এখন থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত মাথা সম্পূর্ণ ঠান্ডা রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এটা পরীক্ষা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিবে।
৩.পরীক্ষার আগের দিন করণীয়
ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, একাধিক কলম ও প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখা
ভর্তি পরীক্ষার ভেন্যু সম্পর্কে ধারণা রাখা। কেন্দ্র ও ভেন্যু আলাদা জিনিস।
প্রবেশপত্রে লেখা থাকবে ভেন্যুর নাম। সেখানেই পরীক্ষা হবে।
গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ভুলে যাওয়ার মতো তথ্যগুলো আরেকবার করে দেখে নিতে হবে বই থেকে।
একটি মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া যেতে পারে।
রাত জেগে পড়া যাবে না। অবশ্যই সময়মতো রাতে ঘুমাতে হবে। নয়তো পরীক্ষার হলে ঘুম পাবে।
দুশ্চিন্তা অনুভূত হবে, খুব স্বাভাবিক। তখন আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে, ‘আমি যা পড়েছি, সেখান থেকেই আসবে। যেগুলো পড়িনি, সেগুলো আসবে না।’
খুব মসলাদার খাবার পরিহার করা উচিত।
৪. পরীক্ষার দিন সকালে করণীয়
সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা।
ধর্মীয় প্রার্থনা মনকে শান্ত রাখে।
মা–বাবার দোয়া নেওয়া।
অবশ্যই কিছু খেয়ে পরীক্ষার হলে যাওয়া।
হাতে কমপক্ষে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় রেখে বাসা থেকে বের হওয়া।
সাধারণত খুব যানজট দেখা যায় সেদিন।
অবশ্যই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নেওয়া।
অপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ভেন্যুতে প্রবেশ না করা। যেমন ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, হার্ডবোর্ড, বক্স, ফাইল ইত্যাদি।
৫. পরীক্ষার হলে করণীয়
পরিদর্শকের প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। কিছু না বুঝলে জিজ্ঞাসা করে নেওয়া।
সতর্কতার সঙ্গে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর পূরণ করা।
ধীরস্থিরভাবে পরীক্ষা শুরু করা।
প্রথম ৩৫-৪০ মিনিটের মধ্যেই ক্রমান্বয়ে ১০০ প্রশ্ন দেখে ফেলা এবং ৫৫-৭০ টি প্রশ্ন উত্তর করে ফেলা। পরবর্তী ২০-২৫ মিনিটে স্কিপ করে আসা প্রশ্নগুলো চিন্তা করে উত্তর করা।
পরীক্ষার শুরুতে কঠিন প্রশ্ন মানে সামনে সহজ প্রশ্ন আসছে। তাই আত্মবিশ্বাস রাখা।
কঠিন প্রশ্ন নিয়ে শুরুতে সময় নষ্ট না করা।
কারও সঙ্গে কথা বলা বা সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।
প্রশ্নপত্রে কলম বা পেনসিল দিয়ে রাফ করা যাবে।
পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে ঘুম দেওয়া।
সবার জন্য অনেক শুভকামনা থাকল।
ডা. রিজভী তৌহিদ, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জাতীয় মেধায় ১ম (২০১৬-১৭)