অর্থনীতির অর্জনগুলোর ‘মহানায়ক’ যেমন সরকার, তেমনি যেগুলো অর্জন হয়নি তার ‘খলনায়কও’ সরকার বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান। আজ বৃহস্পতিবার দুইটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন আকবর আলী খান।
রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে আকবর আলী খান বলেন, ‘আমরা আমাদের সামষ্টিক উন্নয়ন নিয়ে এক অনিশ্চিত গরিমার মধ্যে আছি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে অর্জন গুলো হয়েছে তার ‘মহানায়ক’ যেমন সরকার, তেমনি যেসব অর্জন হয়নি তার ‘খলনায়কও’ সরকার। গত চার দশকে বাংলাদেশের খোলা অর্থনীতিতে উন্নতির দিকটা যেমন বড়, উদীয়মান চ্যালেঞ্জের দিকটাও কম নয়।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে এটা যেমন ঠিক। আবার আইন-শৃঙ্খলার অনেক অবনতি হয়েছে, সুশাসন আসেনি সেটাও ঠিক। পৃথিবীর অনেক দেশ একটি পর্যায় পর্যন্ত অর্থনৈতিক উন্নতি করে আর এগুতে পারেনি। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারায় তারা উন্নতি ধরে রাখতে পারেনি।
দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত বিশ গেরামের গল্প এবং এ এইচ ডেভেলপমেন্ট পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত লিডিং ইস্যুজ ইন রুরাল ডেভেলপমেন্ট:বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ শীর্ষক বই দুটি যৌথভাবে লিখেছেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালকের উপদেষ্টা ড. মাহবুব হোসেন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুল বায়েস। প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগ।
ব্র্যাকের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী পরিচালক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আকবর আলী খান ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব। বই দুটি সম্পর্কে আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস এম নূরুল আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ ও এম. আবু ইউসুফ।
বিশ গেরামের গল্প বইটি লেখা হয়েছে বাংলাদেশের গ্রাম রূপান্তর নিয়ে। ড. হোসেন গত ২৫ বছর ধরে আমাদের দেশের ৫৭টি জেলার ৬২টি গ্রামে খানা পর্যায়ে জরিপ চালিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতি ও জীবিকাসংশ্লিষ্ট একটি তথ্যভান্ডার গড়ে তুলেছেন। তার মধ্য থেকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও উন্নয়ন কৌশলের উপর ভিত্তি করে ২০টি গ্রাম বাছাই করে ওই দুই গবেষক বই দুটি রচনা করেছেন।
বইটির উপর আলোচনা করতে গিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, গ্রামীণ বাংলাদেশের ইতিবাচক রুপান্তরের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে পরিবারের আকৃতি ছোট হয়ে আসা। ২৫ বছর আগে প্রতিটি পরিবারের গড় সদস্য সংখ্যা ছিল ছয়জন। এখন তা চার থেকে পাঁচ জনে নেমে এসেছে। গ্রামীণ সড়ক পথ পাকা হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। প্রবাসী আয় গ্রামে বেশি গিয়েছে।