
ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, ‘আমরা কখনো ভাবতে পারিনি যে স্বাধীন এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য বক্তব্য-বিবৃতি দিতে হবে। মুক্তমনাদের আত্মরক্ষার্থে পথ খুঁজতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক মানববন্ধনে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এসব কথা বলেন। ‘সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন’ ও ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ যৌথভাবে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘কখনো ভাবিনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাধা দেখা যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আর এ জন্য প্রয়োজন সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও সক্রিয় ভূমিকা। তাহলেই এসব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব হবে।’
মানববন্ধনে জঙ্গিবাদীদের ক্রমবর্ধমান সহিংস তৎপরতার বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত করার দাবি জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ‘মৌলবাদীরা ধর্মের নাম ব্যবহার করে মুক্তমনাদের একের পর এক আঘাত করছে। এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষ যে নিষ্ক্রিয়, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। অভিজিৎকে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে হত্যা করাটা সে কথাই প্রমাণ করে। বিবেকের তাড়নায় দেশ-মাতৃকার কল্যাণে নিবেদিত যারা ইতিহাস-ঐতিহ্যকে অগ্রসর করে, যারা প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়তে চায়, তাঁদের বিরুদ্ধে বর্বরোচিত এসব হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে, ধর্ম ব্যবসায়ীরা মানবসভ্যতা মানে না।’
সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আজ অটুট ও ঐক্যবদ্ধ আছে। যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর করে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা আস্থার জায়গা তৈরি করে নিতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য মুক্তমনাদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। দল-মত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে এদের প্রতিহত করতে হবে।
এ সময় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের যুগ্ম সমন্বয়ক জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, খেলাঘরের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন ভূঁইয়া, নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, আইইডি’র নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান ও জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাজাহান আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।