
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে এক ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের প্রান্তিক অবস্থান এখনো রয়ে গেছে। উন্নয়নের সুফল তারা ভোগ করতে পারছে না। অনেক ক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে তাদের সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম আইপিনিউজ শনিবার এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এখানে দেশের বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকেরা অংশ নেন। ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস।
সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজোয়ানা করিম বলেন, ‘দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির যথাযথ চর্চার সুযোগ কমছে। আমরা তাদের ওপর আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিকে চাপিয়ে দিতে পারি না।’
সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা বলেন, ‘আমরা বলছি উন্নয়নের কথা। উন্নয়নের নামে আসলে লুটপাটই হয়। উন্নয়ন মানে তো অবকাঠামো নির্মাণ করা নয়। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের প্রকৃত উন্নয়নে কোনো তৎপরতা নেই।’
বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলী খান বলেন, নৃগোষ্ঠীর মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন মূলধারার আন্দোলনকেই সমৃদ্ধ করবে। এ জন্য এসব জাতিসত্তার মানুষকে যেমন এগিয়ে আসতে হবে, তেমনি মূলধারার মানুষকেও সক্রিয় হতে হবে তাদের সম্পৃক্ত করার জন্য।
বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সুলভ চাকমা বলেন, সংবিধানে বহুত্বের স্বীকৃতি নেই, বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি নেই।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি নাসিরউদ্দিন প্রিন্স বলেন, পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিতে অনেক কিছুই লেখা আছে। কিন্তু চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হয়নি। সাবেক ছাত্রনেতা মানবেন্দ্র দেব বলেন, ‘আজ উন্নয়নের নামে রাস্তা হচ্ছে। কিন্তু উন্নয়নের মহাসড়কের নামে যা চলছে, তার নিচে কত হাহাকার, তা খতিয়ে দেখছি না।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়নের নামে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী–অধ্যুষিত এলাকায় রাস্তা হয়, পর্যটন হয়, ইকোপার্ক হয়। কিন্তু সেখানকার জনগণের কোনো প্রকৃত উন্নয়ন আমরা দেখতে পাই না।’
সাবেক ছাত্রনেতা এবং ‘পরিবেশ বার্তা’র সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।