তিন জেলায় আরও ৫০০ শীতার্ত কম্বল পেলেন

'এহোন এট্টু উম পামু'

ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বিতরণ করা কম্বল হাতে শীতার্তরা l প্রথম আলো
ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বিতরণ করা কম্বল হাতে শীতার্তরা l প্রথম আলো

প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল পেয়েছেন আরও ৫০০ জন শীতার্ত মানুষ। গত রবি ও গতকাল সোমবার ভোলা, রাজশাহী ও মেহেরপুর জেলায় এসব কম্বল বিতরণ করা হয়। হাতে কম্বল পেয়ে ভোলার সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মরিয়ম বিবি (৫০) বলেন, ‘শীতে শইলড্যা কালা অইয়্যা গেছেগ্যা, আমনেরা কম্বল দিলেন, এহোন এট্টু উম পামু।’

ঢাকার বাইরে প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদক প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ভোলা: জেলায় দুই দিন শীত একটু কম ছিল। কিন্তু গতকাল আবারও জেঁকে বসে। কনকনে হাওয়া বয়। শরীরের কাঁপন ধরায়। এসব উপেক্ষা করে সদর উপজেলার রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সমবেত হন শীতার্ত মানুষেরা। দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের খাদিজা বেগম (৮৬)। হাতে কম্বল পেয়ে বেজায় খুশি। কম্বলে বারবার চুমু খাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর মতো আরেক বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম (৮০) কম্বল হাতে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। একে একে গ্রামটির ২০০ অসহায় বৃদ্ধ নারীকে গতকাল বিকেলে কম্বল দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব এস এম বাহাউদ্দিন, স্থানীয় পল্লি চিকিৎসক আমির হোসেন, বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক শোভন, সহসভাপতি আসিফ মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।

রাজশাহী: পবা উপজেলার ১০টি গ্রামে গতকাল বিকেলে এবং আগের রাতে নগরের ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে ১০০টি কম্বল বিতরণ করা হয়।

গ্রামগুলো হলো পারিলা, ললিতাহার, খড়খড়ি, তেবাড়িয়া, ভাল্লুকপুর, কমলাপুর, রিস্তইল, মাড়িয়া, পোড়াপুকুর ও সারংপুর। আগের দিন বন্ধুসভার বন্ধুরা গ্রামগুলোতে ঘুরে দুস্থ ও শীতার্ত মানুষের তালিকা তৈরি করেন। গতকাল বিকেলে পারিলা গ্রামের কম্বল বিতরণের সময় রাজশাহী বন্ধুসভার বন্ধু মুক্তিযোদ্ধা নূর হামিম রিজভী বীরপ্রতীক, জাহিদুল ইসলাম, মুক্তাদির বাঁধন, ফারুক হোসেন, ইশরাত জাহান গিয়াসী, কুয়াশা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 ললিতাহার গ্রামের সফেজান (৫৫) নামের এক নারী কম্বল পাওয়ার পর বলেন, ‘এই শীতে একটা গরম কাপড় নাই। রাতে ভালো ঘুম আসতে চাইত না। কম্বলটা পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’

মেহেরপুর: গত রোববার স্থানীয় বন্ধুসভার সদস্যরা শীতার্ত ২০০ নারী-পুরুষ-শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির হাতে কম্বল তুলে দেন। এ সময় বন্ধুসভার সভাপতি আবুল বাশার, সাধারণ সম্পাদক হোসেন খান, উপদেষ্টা নূরুল আহমেদ, বন্ধুসভার বন্ধু তাশফিক, কামরুল, মিয়ারুল, মুজাহিদ, আবির, নাসিম, নাহিদ, ঝুমুর, লিয়া, অনন্যা, সেতু, স্বর্ণালী, লিলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কম্বল পেয়ে বাক্‌প্রতিবন্ধী রেজাউল হক (৩৫) একগাল হাসেন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম বলেন, ‘নেতাদের কম্বলের চাইতে প্রথম আলোর কম্বল অনেক সম্মানের। তাই এখানে কম্বল নিতে এসেছি।’

{প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, ভোলা মেহেরপুর প্রতিনিধি}