
দুর্গাপূজার আগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর নিঃশর্ত মুক্তিসহ মোট পাঁচ দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সনাতনী জোট। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্মিলিত সনাতনী জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ কান্তি দে এবং প্রসেনজিত হালদার।
লিখিত বক্তব্যে জানানো দাবিগুলো হলো এবার শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপন করতে পারা; ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা, দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। এর আগে অন্তর্বতী সরকারের কাছে পেশ করা জোটের আট দফা দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করারও দাবি করা হয়। এর মধ্যে আছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ সম্মিলিত সনাতনী জোটের সব কারাবন্দীর নিঃশর্তে মুক্তি এবং বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সনাতনী সম্প্রদায়কে সব ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশে শান্তিপূর্ণ সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করছে একশ্রেণির দুর্বৃত্ত। দেশে বিভিন্ন সময় সনাতনীসহ সব সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতনসহ নানা কারণে দেশের সনাতনীরা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে; কিন্তু কোনো ঘটনার কোনো বিচার সংখ্যালঘু তথা সনাতনী সম্প্রদায়ের সম্প্রদায় পায়নি। তাই ক্রমাগত দেশত্যাগের কারণে দেশ হিন্দুশূন্য হওয়ার পথে। এর কারণে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শারদীয় দুর্গাপূজা নিয়ে যে অনিরাপত্তা দেখা দিয়েছে, তাতে সনাতনী সম্প্রদায় শঙ্কিত। সারা দেশের প্রায় অধিকাংশ জেলায় সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার, লুটপাট, হত্যা, নারীর শ্লীলতাহানি, প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দির ভাঙচুর, গির্জায় হামলা, বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এমনকি দেশের বিভিন্ন মাজার অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিগত সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এর পরেও সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো অবলীলায় অস্বীকার করে।
সম্মিলিত সনাতনী জোটের নেতারা বলেন, চলতি মাসের ১৭ তারিখে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ‘সব ধর্মের সমান মর্যাদা দিতে বাধ্য সরকার, কোনো ধর্মকে আলাদা করে দেখতে পারবে না রাষ্ট্র।’ কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তাঁরা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যা বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সেটির বাস্তবায়ন দেখতে চান তাঁরা।