
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেছেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) প্রোটোকল মেনেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিমানবন্দরে সপ্তাহে এক দিন ফায়ার ড্রিল (অগ্নিনির্বাপণ মহড়া) করা হয়। এমনকি আগুন লাগার পরও আইসিএওর সব নিয়ম মেনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় বেবিচক ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে (পণ্য রাখার স্থান) গত শনিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে আগুন লাগে। আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় ২৬ ঘণ্টা পর। এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। তবে প্রাথমিক হিসাবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার পণ্য ও কাঁচামাল পুড়ে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে বলে উল্লেখ করছেন তাঁরা।
মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের কারণে বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন এক দিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ৯ নম্বর গেট দিয়ে কার্যক্রম চালু আছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আগুনের সূত্রপাত কোনো আমদানি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। রানওয়ের অ্যাপ্রনে পণ্যসামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। এর কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে সমস্যা হয়। এর দায় বিমান, ঢাকা কাস্টম হাউস ও সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টদের। নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিনের মধ্যে পণ্য অপসারণের কথা। কিন্তু সেখানে বছর ধরে পণ্য পড়ে থাকে। তবে তিনি তদন্তের স্বার্থে কোনো সংস্থার ওপর দায় দিতে চান না।
ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি—এমন অভিযোগের বিষয়ে মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, এটা সত্য নয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন। ফায়ার সার্ভিস এমন কোনো অভিযোগ করেনি। তবে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সটি বেবিচকের উল্লেখ করে সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, তবে ভেতরের কার্যক্রম পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ঢাকা কাস্টম হাউস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।
মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের ঘটনায় তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে বিমানবন্দরের ভাবমূর্তির কোনো ক্ষতি হবে না।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আর্থিক বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে নতুন কার্গো ভবন বুঝে নেওয়া যাচ্ছে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যে টাকা দাবি করছে, তার সঙ্গে তাদের প্রায় হাজার কোটি টাকার একটি ব্যবধান রয়েছে।