Thank you for trying Sticky AMP!!

ড. ইউনূসের গড়া প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখলের চেষ্টা’ বন্ধের আহ্বান

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো ‘জবরদখলের চেষ্টাসহ’ তাঁর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সব পদক্ষেপ বন্ধের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৩৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক। আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখল করার চেষ্টা’সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদের প্রতি তাঁদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকম ভবনে অবস্থিত গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকমসহ এসব প্রতিষ্ঠান ‘জবরদখল করার চেষ্টা’ হিসেবে এতে অনধিকার ও জোরপূর্বক প্রবেশ এবং ভবনটির সামনে রাজনৈতিক সমাবেশ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ একপর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন করা হয়েছে বলে দাবি করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, এসব প্রতিষ্ঠানের সংশোধিত ‘আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন’ অনুসারে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনার এখতিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের নেই বলে ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর পরও এ বিষয়ে কোনো আইনগত দাবি থাকলে তা আদালতের কাছে উপস্থাপন করার উদ্যোগ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রহণ করতে পারত। কিন্তু সেটা না করে বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো ‘দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে, তা বেআইনি ও অনৈতিক’ বলে তাঁরা মনে করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস সম্পর্কে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ যেসব ‘মানহানিকর’ অভিযোগ করেছেন, তারও নিন্দা জানান বিবৃতিদাতারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে ড. ইউনূসকে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হয়রানি করেছে। শ্রম আইনসংক্রান্ত দেওয়ানি চরিত্রের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে তা অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনা থেকে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাগুলোকে পৃথকভাবে দেখার সুযোগ নেই বলে তাঁরা মনে করেন।

বিবৃতিদাতারা বলেন, ড. ইউনূস অতিদরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ করে বিশ্বে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছেন। আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের মোড়কে তাঁর এবং তাঁর গড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবস্থা গ্রহণ তাঁর কর্মযজ্ঞকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং বিশ্বের কাছে নেতিবাচক বার্তা প্রদান করছে।

বিবৃতিদাতারা হলেন, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুশাসনের জন্য নাগরিকর (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, সারা হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকারকর্মী শারমিন মুরশিদ, শিরিন প হক, সঞ্জীব দ্রং, জাকির হোসেন, মো. নূর খান, রেহনুমা আহমেদ, ফরিদা আখতার, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নায়লা জেড খান, নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম ও আর রাজী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসরিন খন্দকার, গবেষক রোজিনা বেগম, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, আইনজীবী সালমা আলী, তবারক হোসেইন, সুব্রত চৌধুরী, ব্যাংকার সৈয়দ নাসের বখতিয়ার আহমেদ, অরূপ রাহী ও রেজাউর রহমান লেনিন।