রাসায়নিকের গুদাম থাকা পুরান ঢাকার ভবনের তালিকা দিতে নির্দেশ
রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম, কারখানা ও দোকান রয়েছে—পুরান ঢাকার এমন ভবনের তালিকা দাখিল করতে এবং এগুলোর অনুমোদনবিষয়ক অবস্থা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম, দোকান, কারখানার জন্য অস্থায়ী (শ্যামপুর ও টঙ্গিতে) ও স্থায়ী (মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে) পল্লি স্থাপনের অগ্রগতিও জানাতে বলা হয়েছে। আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে তালিকাসহ এসব তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।
একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। শিল্পসচিব, পরিবেশসচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউক চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শকের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম, কারখানা ও দোকান সরাতে এবং বাসায়নিক সংরক্ষণে পর্যাপ্ত ও কার্যকর নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ ঢাকার অন্যত্র পল্লি স্থাপনসহ কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বরে পাঁচটি পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুটি পরিবারের সদস্যরা ওই রিট করেন।
রিট আবেদনকারীরা হচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নিজেরা করি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবারের সদস্য মোছা. ফাতেমা আক্তার ও মো. নাসির উদ্দিন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
এর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি কয়েকটি সুপারিশ করেছিল। কমিটির সুপারিশ অনুসারে অনুমোদনহীন রাসায়নিকের গুদাম, কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও হাইড্রেন্ট পয়েন্ট স্থাপন এবং রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয়ে মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল হয়েছে।
আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিমতলীর ঘটনার পর ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহত ও অনেকে আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৩০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রদান করে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়নি।’
আবার এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিতে পদক্ষেপের জন্য রিট আবেদনটি করা হয় বলে জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, বিপজ্জনক দ্রব্যের ব্যবহার, গুদামজাতকরণ ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের বিধান অনুসারে বিধি প্রণয়ন করতে এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে আহত–নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, আদালতের রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
-
ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
-
ইরানে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘণ্টাখানেক বেঁচে ছিলেন এক আরোহী
-
রপ্তানি আয় দেশে ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন উদ্যোগ
-
ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের খুঁটিনাটি শুনলেন পুতিন
-
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে এলাকা ভাগ করে দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী