Thank you for trying Sticky AMP!!

বেইলি রোডে আগুন: নিহত শান্ত-মেহেদী-নাঈমদের পরিবার কীভাবে চলবে

রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় ছেলে শান্ত হোসেনকে হারিয়ে কান্না থামছে না মা লিপি আক্তারের

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের নিচতলার ওয়াফেল অ্যান্ড জুস বারে সহকারী শেফের কাজ করতেন শান্ত হোসেন (২৩)। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ভবনটিতে আগুন লাগে। আগুনের এই ঘটনায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান শান্ত। আর্থিক অনটনে তাঁর উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। পরে তিনি ঢাকায় এসে চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরেছিলেন। তিনি মারা যাওয়ায় পরিবারটি এখন দিশাহারা।

শান্তর বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের ভুঁইগড় পশ্চিমপাড়া এলাকায়। সেখানকার একটি টিনের ঘরে থাকেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন শান্ত। তাঁর ছোট ভাই প্রান্ত হোসেন এবার রাজধানীর কবি নজরুল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন। ছোট বোন আমেনা আক্তার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

গত মঙ্গলবার কথা হয় শান্তর ছোট ভাই প্রান্তর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভাই নিজে না পড়ে আমার ও ছোট বোনের পড়ার খরচ দিতেন। তাঁর আয়েই সংসার চলত। এখন আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।’

শান্ত-প্রান্তদের বাবা আমজাদ হোসেন, মা লিপি আক্তার। ধারদেনা করে বছর কয়েক আগে দালালের সহায়তায় কাজের জন্য সৌদি আরব যান আমজাদ। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি প্রতিশ্রুতিমতো কাজ পাননি। তিনি নিজেই সেখানে সমস্যার মধ্যে আছেন। বাড়িতে টাকাপয়সা পাঠাতে পারছেন না। ফলে পরিবারটির দেনার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাত লাখ টাকা।

জুস বারে চাকরি করে শান্ত মাসে ১৭ হাজার টাকা বেতন পেতেন। প্রান্ত বলেন, আগুনের ঘটনার পর রাজধানীর ওয়ারীর একটি মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন মালিক। ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনসহ মোট ২০ হাজার টাকা জুস বারের পক্ষ থেকে তাঁদের দেওয়া হয়েছে। এখন এই টাকাই তাঁদের সম্বল। আগুনে প্রাণহানির এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনো টাকা পাওয়া যাবে কি না, তা-ও জানেন না তাঁরা।

বেইলি রোডের সাততলা ভবনটিতে আগুনের ঘটনায় শান্তসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শান্তর মতো যাঁরা কম আয়ের ছিলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এখন শোক প্রকাশেরও অবকাশ পাচ্ছেন না। তাঁরা ভবিষ্যৎ নিয়ে ভীষণ উদ্বেগে আছেন।

Also Read: বেইলি রোডের আগুন কফির দোকান ‘চুমুক’ থেকে

পরিবারের একমাত্র আশা ছিলেন নাঈম

ভবনটিতে থাকা কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ নিয়েছিলেন ১৯ বছর বয়সী মো. নাঈম। চাকরির তৃতীয় দিন আগুনের ঘটনায় তিনি মারা যান।

নাঈমের বাড়ি বরগুনা সদরের বড় গৌরীচন্না এলাকায়। পরিবারের অভাব দূর করাসহ নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতে মাসখানেক আগে কাজের সন্ধানে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। প্রথমে তিনি একটি হোটেলে কাজ নিয়েছিলেন। পরে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ নেন।

নাঈমের বাবা নান্টু হাওলাদার। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। কখনো রিকশা চালান, কখনোবা জিনিসপত্র ফেরি করেন। মা লাকি বেগম অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তাঁর এক বোন আছে। তাঁর বিয়ে হয়েছে। লাখ তিনেক টাকা ঋণ আছে নাঈমের পরিবারের।

নাঈম এইচএসসি পাস করেছিলেন। কয়েক মাস কাজ করে উপার্জিত অর্থ দিয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন তিনি।

মুঠোফোনে কথা হয় নাঈমের মামা ইলিয়াস মুন্সীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নাঈম ছিল পরিবারের একমাত্র আশা। নাঈম একটু শিক্ষিত ছিল। এখন তো সে মরেই গেল। পরিবারটি কীভাবে যে চলব?’

Also Read: বেইলি রোড: অগ্নিকাণ্ডের কাঠামোগত ভিত্তি যেভাবে বহাল থাকে

ইলিয়াস মুন্সী জানান, নাঈম মারা যাওয়ার পর তাঁর কর্মক্ষেত্র থেকে ২০ হাজার টাকা পায় পরিবার। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লাশ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া, দাফন-কাফনসহ নানা খাতে এই টাকা খরচ হয়ে গেছে।

নাঈমের মৃত্যুর পর প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বলা হয়, ভবনে আগুন লাগার পর নাঈম তাঁর বাবাকে ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আব্বু, আমার খুব বিপদ, আমার জন্য দোয়া কইরো। আমার মার্কেটে আগুন লাগছে।’ তখন বাবা তাঁকে ফোনের লাইন না কাটার জন্য বলেছিলেন। নাঈম বলেছিলেন, তাঁর মুঠোফোনে কথা বলার জন্য পর্যাপ্ত টাকা নেই। তখন বাবা তাঁকে ফোন কেটে দিতে বলেছিলেন। তিনি ছেলেকে ফোন করবেন বলেও জানিয়েছিলেন। এরপর বাবা নাঈমকে ফোন করেছিলেন। ফোনে রিং হয়েছিল। কিন্তু ছেলে আর ফোন ধরেননি।

তুষার হাওলাদার

অসহায় তুষারের মা

তুষার হাওলাদার (২৩) সাংবাদিকতায় স্নাতক করেছিলেন। স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন। প্রায় এক মাস আগে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ২০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। আগুনের ঘটনায় তিনি মারা যান।

তুষারের মা অঞ্জনা হাওলাদার বলেন, ‘ছেলের প্রথম চাকরির বেতনের টাকা হাতে আসার আগেই তো সে মারা গেল। এক মেয়ে কলেজে পড়ছে। ছেলের বাবা ফার্নিচারের কাজ করেন। কোনোরকমে সংসারটা চলছিল। তুষার সংসারে সচ্ছলতা আনবে বলে আশা করছিলাম। এখন অসহায় লাগছে।’

অঞ্জনারা পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তুষারের মৃত্যুর পর বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য পরিবারটি এখন ঝালকাঠিতে গ্রামের বাড়িতে আছে। সংসারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ে আছেন অঞ্জনা।

Also Read: বেইলি রোডে আগুন: ভবনের ব্যবস্থাপকসহ চারজন ২ দিনের রিমান্ডে

এখন হাল ধরবেন মেহেদীর ছোট ভাই

ভবনটিতে থাকা একটি রেস্তোরাঁয় শেফের কাজ করতেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মেহেদী হাসান (২৭)। ছোট ভাই ইসরাফিল মিয়াকেও ঢাকায় এনে একই রেস্তোরাঁয় কাজ দিয়েছিলেন তিনি। মেহেদী বেতন পেতেন ২০ হাজার টাকা। ইসরাফিল পেতেন ১০ হাজার টাকার মতো। তাঁদের বাবা কৃষিকাজ করেন।

ইসরাফিল বলেন, ‘বড় ভাই নিজের খরচের পর যে টাকা বাঁচত, তা সংসারে দিতেন। আমাকেও ঢাকায় এনে কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন। আগুনের ঘটনায় ভাই মারা গেল। আমারও তো কাজটা নেই। দুই ভাইয়ের বেতনের ৩০ হাজার টাকার মধ্যে দুর্ঘটনার পর মালিক ২০ হাজার টাকার মতো দিয়েছেন। এর বাইরে কেউ কোনো সাহায্য করেনি।’

মেহেদী বিএতে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি হোটেলের কাজের ওপর একটি কোর্স করেছিলেন। একই ধরনের কাজ করতে মেহেদী বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

ইসরাফিল এইচএসসি পাস করেছেন। আগুন লাগার সময় তিনিও ভবনটিতে ছিলেন। পরে ছাদ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ইসরাফিল বলেন, ‘এখন তো আর আমার পড়াশোনা করার কোনো উপায় নেই। বাড়ি ফিরে কোনো কাজ করে সংসারের হাল ধরতে হবে।’

Also Read: বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ, আটক কয়েকজন

গাজী জুয়েল রানা

স্বামী হারিয়ে দুশ্চিন্তায় রেবা

ভবনটির একটি রেস্তোরাঁর শেফ ছিলেন গাজী জুয়েল রানা (৪৩)। একই রেস্তোরাঁয় তাঁর ভাগনে রাকিব আকন (৩৭) কাজ করতেন। আগুন লাগলে তাঁরা ছয়তলার জানালা ভেঙে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। রাকিব নিরাপদে নিচে নেমে আসেন। তবে জুয়েল নিচে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

জুয়েলের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামে। স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকায় থাকতেন। জুয়েলের আয়েই চলত পুরো পরিবার। স্ত্রী রেবা (৩০) পড়াশোনা করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। জুয়েল-রেবার সংসারে সাড়ে সাত বছরের একটি মেয়ে ও আড়াই বছরের একটি ছেলে আছে। জুয়েল চার থেকে পাঁচ বছর ধরে শেফের কাজ করছিলেন।

রেবা বলেন, ১৩ বছরের বিবাহিত জীবন তাঁদের। ছেলের রক্তে সংক্রমণ আছে। নিয়মিত রক্ত দিতে হয়। সঞ্চয় বলতে কিছু নেই। শ্বশুর-শাশুড়িরও বয়স হয়েছে। স্বামীর বড় ভাইও আলাদা থাকেন।

জুয়েল মারা যাওয়ার পর ভাগনে রাকিব প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁর মামা জানালা দিয়ে বের হয়ে একটি এসির ওপর বসেন। এ সময় এসিসহ ভেঙে তিনি নিচে পড়ে যান। ভবনটির জানালার কয়েকটি কার্নিশের সঙ্গে তাঁর শরীরে আঘাত লাগে। তাঁর মাথা ফেটে যায়। মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। পরে জুয়েলের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

Also Read: ‘আগুনে পুড়ে আদরের সন্তানের এমন মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হয়’

রেবা বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে যখন যাই, তখন স্বামীর মরা মুখটাই খালি দেখছি। স্বামী তো কিছু রাইখ্যা যাইতে পারেন নাই। এখন আল্লাহ জানেন, আমরা কেমনে চলমু। স্বামীর উপার্জন দিয়াই আমরা চলতাম। এত ছোট বাচ্চা রাইখ্যা আমি যে কোনো কাজ করমু, তারও তো উপায় নাই।’

স্বামীর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়াসহ দাফন-কাফনের জন্য সরকারের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন বলে জানান রেবা।

আশরাফুলের মা পাগলপ্রায়

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস কয়েক আগে স্নাতক শেষ করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার আশরাফুল ইসলাম (২৪)। বসে না থেকে তিন মাস আগে বেইলি রোডের এই ভবনের একটি পোশাকের শোরুমে খণ্ডকালীন চাকরি নিয়েছিলেন তিনি। আগুনের ঘটনায় তিনি মারা যান।

তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট আশরাফুল। বড় ভাই তরিকুল ইসলাম ঢাকায় ব্যবসা করেন। ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন আশরাফুল। তরিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বছর তিনেক আগে বাবা মারা গেছেন। মাত্র ১৮ দিন আগে নানি মারা গেছেন। এখন ছোট ভাই মারা গেল। আমার মা পাগলপ্রায়।’

আশরাফুল বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে জানান তরিকুল। তিনি বলেন, ‘ভাইটা সব সময় চাইত নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে। পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিতে চাইত না। এই ভাইকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।’

Also Read: বেইলি রোডে আগুন: কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট

আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রিন কোজি কটেজ ভবন

নানা তৎপরতা

বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যুতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আগুনের ঘটনায় প্রাণ হারানো বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই শিক্ষার্থীসহ নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও মানববন্ধন করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই অগ্নিকাণ্ডের মতো অসাবধানতাজনিত সব দুর্ঘটনার পেছনে দায়ীদের শাস্তিসহ ১৪ দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমিটি গঠন করে তদন্ত এবং নিহত-আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট হয়।

দুই আইনজীবীর করা পৃথক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দিয়েছেন। রাজধানীর ভবনগুলোয় অগ্নিনির্বাপণে কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা দেখতে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চিহ্নিত করা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দৃশ্যমান স্থানে নোটিশ টানানোর জন্য ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বহুতল ভবন, কারখানা ও স্থাপনায় গত বছর ও চলতি বছর সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কতজন নিহত হয়েছেন, জীবন-সম্পত্তির কেমন ক্ষয়ক্ষতি ও কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে—এসব তথ্য জানিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। অপর একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহত তানজিনা নওরীনের এক আত্মীয় এই রিট করেন।

Also Read: বেইলি রোডে আগুন থেকে বেঁচে ফিরেছেন তাঁরা, জানালেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা

৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোলায়মান তুষার।

নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তাঁরা যাঁদের হারিয়েছেন, তাঁরা আর ফিরবেন না। প্রায়জন হারানোর এই বেদনা তাঁদের আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। ক্ষতিপূরণ আদৌ পাওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন।

মানসিক আঘাত

আগুনের ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছিল। এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন চারজন। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন দুজন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অরেঞ্জ ইউনিটের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ইউনিটে আহত ১১ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাঁরা সবাই বাড়ি ফিরেছেন। চিকিৎসা নেওয়া এক দম্পতির অ্যাজমাসহ কিছু জটিলতা আগে থেকেই ছিল। এই দুজনের সুস্থ হতে সময় লাগবে। অন্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন। তবে তাঁদের যে মানসিক আঘাত (ট্রমা), তা থেকে তাঁরা কবে বের হতে পারবেন, সেটা বলা কঠিন।

Also Read: জানালা ভেঙে বের হলেন ভাগনে, নিচে পড়ে নিহত মামা